ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত, উদ্ভাবনী ও প্রযুক্তিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে স্মার্ট শ্রমিক এবং শ্রমব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে স্মার্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই একজন রিকশাচালকের সন্তান রিকশাচালক হবে এখন আর বিশ্বাস করি না আমরা।
প্রতিমন্ত্রী আজ সিংড়া উপজেলা শ্রমিক লীগ কর্তৃক আয়োজিত ‘শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত “মহান মে দিবস ২০২৪” উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমৃত্যু বাংলার কৃষক-শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শ্রমিক ভাইবোনদেরকে সম্মান ও মর্যাদার জীবন উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট শ্রমিক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে আমরা সকল শ্রমিক-মেহনতি মানুষের হাতে স্মার্ট ও ক্যাশলেস টুলগুলো তুলে দিচ্ছি। যাতে আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা প্রতিটি জায়গায় ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধা গ্রহণ করতে পারে এবং তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে পারে।
পলক আরও বলেন, ২০০৯ সালের মে মাস থেকে মে দিবসকে স্মরণীয় করতে এবং প্রতিবছর সিংড়ার কিছু শ্রমিককে মালিকে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। সেখান থেকেই প্রতিবছরই আমরা শ্রমিকদেরকে রিকশা, ভ্যান, সেলাই মেশিনের মতো উপকরণগুলো দেওয়া শুরু করি। যাতে শুধুমাত্র শ্রমিক দিবসের বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে শ্রমিকদের জীবনে প্রকৃতপক্ষেই পরিবর্তন আনতে পারি। সিংড়াতে শ্রম-মেধা-যোগ্যতা-দক্ষতাসম্পন্ন ব্যাক্তিদের মূল্যায়নের পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বর্তমান সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, সিংড়ার সন্তানদের সিংড়ার মাটিতেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য চলনবিল স্মার্ট সিটি তৈরি করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেখানে সিংড়ার কৃষক-শ্রমিকদের সন্তানরা প্রশিক্ষণ নিয়ে আয় করতে পারছে। তিনি বলেন, সিংড়ায় টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নলেজ পার্ক স্থাপনের ফলে একদিকে যেমন ডিজিটাল কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে, অপরদিকে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম ও বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজনের ব্যবস্থা করে তরুণ প্রজন্মের মেধা ও মননের বিকাশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া তিনি আরও বলেন, সিংড়ায় একটি ট্রাকস্ট্যান্ড এবং কয়েকটি রিকশাস্ট্যান্ড স্থাপনের জন্য জায়গা নির্বাচন করেছি। সিংড়াকে একটি নান্দনিক ও মানবিক স্মার্ট সিংড়া হিসাবে গড়ে তোলার জন্য আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একটি মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করছি।
প্রতিমন্ত্রী তাঁর নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনারা আমাকে পরপর চারবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। আমার শ্রমিক ভাইবোনেরা প্রতিটি নির্বাচনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, নিঃস্বার্থভাবে আমাকে ভোট-ভালোবাসা দিয়েছেন, তাদের এই ঋণ শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তিনি তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে নিজ এলাকার ভোটারদের সেবা করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
পরে প্রতিমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে শ্রমিকদেরকে মালিকে রূপান্তর করার জন্য রিকশা, ভ্যান, সেলাই মেশিন এবং তীব্র দাবদাহের জন্য শ্রমিকদের মাঝে খাবার স্যালাইন ও পানি এবং ক্যাপ বিতরণ করেন সিংড়া উপজেলা প্রশাসন এবং তিনি কৃষি শ্রমিকদের জন্য তেলিগ্রাম ও জোরমল্লিকায় আগামীকালের মধ্যে টিউবওয়েল স্থাপনে স্থানীয় নেতাদের নির্দেশনা দেন।
নাটোর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ ওহিদুর রহমান শেখ, সিংড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম স্বপন।