আধুনিক যুগে ডিজিটাল ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের স্ক্রিনের সামনে দীর্ঘ সময় কাটানোর ফলে চোখের শুষ্কতার প্রবণতা বেড়েছে। এই সমস্যা, যা সাধারণত “ড্রাই আই সিন্ড্রোম” বা “ডিজিটাল আই স্ট্রেইন” নামে পরিচিত, বর্তমানে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে।
কীভাবে স্ক্রিন টাইম চোখের উপর প্রভাব ফেলে
স্ক্রিনের সামনে দীর্ঘ সময় কাটানোর ফলে আমাদের চোখের পলক কম পড়ে। পলক পড়া চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি চোখের উপর এক স্তর জল ছড়িয়ে দেয় যা চোখকে আর্দ্র রাখে এবং বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে। কম পলক পড়ার কারণে চোখে পর্যাপ্ত জল ছড়িয়ে না পড়ার ফলে চোখ শুষ্ক ও জ্বালা করতে পারে।
শুষ্ক চোখের লক্ষণসমূহ
ডিজিটাল ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে চোখ শুষ্কতার কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
– চোখে শুষ্কতা ও জ্বালা
– লাল চোখ
– ঝাপসা দৃষ্টি
– চোখে বালি বা কাঁকর থাকার অনুভূতি
– মাথাব্যথা এবং ঘাড় ও কাঁধে ব্যথা।
চোখের শুষ্কতা ও জ্বালা কমানোর জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে:
২০-২০-২০ নিয়ম মেনে চলুন: প্রতি ২০ মিনিট পর পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে তাকান। এটি চোখের পলক পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে এবং চোখের শুষ্কতা কমায়।
চোখের পলক বেশি ফেলুন: স্ক্রিনের সামনে কম পলক পড়ার কারণে চোখ শুষ্ক হয়, তাই পলক বেশি ফেলার চেষ্টা করুন।
আর্দ্রতা বজায় রাখুন: পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং প্রয়োজনে চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন।
স্ক্রিনের উচ্চতা ও অবস্থান ঠিক রাখুন: স্ক্রিনটি চোখের স্তরের নিচে রাখুন এবং প্রতিফলিত আলো থেকে বাঁচার জন্য স্ক্রিনের পজিশন সামঞ্জস্য করুন।
স্ক্রিন ব্রাইটনেস ও ব্লু লাইট ফিল্টার: স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা এবং ব্লু লাইট ফিল্টার ব্যবহার করে চোখের স্ট্রেইন কমান
যদি উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিগুলো কার্যকর না হয় এবং চোখের শুষ্কতা অব্যাহত থাকে, তবে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা জরুরি। চক্ষু বিশেষজ্ঞ নির্ধারণ করতে পারেন চোখের সমস্যা কতটা গুরুতর এবং কী ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।