কম্পিউটার ভিশন বিষয়ক মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন সিভিপিআর (কনফারেন্স অন কম্পিউটার ভিশন অ্যান্ড প্যাটার্ন রিকগনিশন) আনুষ্ঠানিকভাবে সিয়াটলে শুরু হয়েছে। এই বছর সম্মেলনটিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে অপো। প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকটি সাম্প্রতিক গবেষণাপত্র উপস্থাপনার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এগুলির মধ্যে এআই সম্পর্কিত গবেষণাপত্রও রয়েছে। এছাড়া অপো’র ফ্ল্যাগশিপ এআই ফোন ফাইন্ড এক্স৭ আলট্রা ও সম্প্রতি বাজারে আসা অপো রেনো ১২ কনফারেন্সে প্রদর্শিত হয়। এগুলির উদ্ভাবনী এআই ফিচারগুলি বিশেষভাবে প্রদর্শন করা হয়। এর মাধ্যমে অপো বিশ্বব্যাপী এআই ফোনের অগ্রগতির পাশাপাশি এর ব্যবহারকে সবার জন্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।
অপো’র সেলস অ্যান্ড সার্ভিসের প্রেসিডেন্ট অফ ওভারসিজ মার্কেট বিলি ঝাং বলেন, “অপো প্রতি বছর সিভিপিআর-এর সাথে যুক্ত হচ্ছে এবং এই বছর আমাদের অর্জনগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এআই সবসময় আমাদের জন্য বিনিয়োগের একটি প্রধান খাত। এআই ফোন ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা আমাদেরকে আবারও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় অভিনবত্ব আনার সুযোগ দিচ্ছে। কম্পিউটার ভিশন ও অন্যান্য এআই সম্পর্কিত বিষয়ে আমাদের সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে সারা বিশ্বের অংশীদারদের সাথে আলোচনা ও মতবিনিময় করার জন্য সিভিপিআর অপো’র জন্য একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম। সিভিপিআর-এ আমাদের অংশগ্রহণ এআই ফোনের ক্ষেত্রে অপো’র দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ও সংকল্পের প্রতিফলন।”
সম্মেলনের নির্বাচিত গবেষণাপত্রের মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে অপো’র এআই গবেষণা
এই বছর অপো রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও বিভিন্ন আরঅ্যান্ডডি টিম সিভিপিআর-এ ১১টি নির্বাচিত গবেষণাপত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে বিশেষ স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এই গবেষণাপত্রগুলির বিষয়বস্তু হচ্ছে ইমেজ রিস্টোরেশন, ডিজিটাল হিউম্যান জেনারেশন, ভিডিও সেগমেন্টেশন, ডাইনামিক মোশন ক্যাপচার, ডাইনামিক সিন ইমেজ সিনথেসিস, মাল্টি-ভিউ ৩ডি অবজেক্ট ডিটেকশন ও ৩ডি রেন্ডারিংসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। এআই ফোনের সবচেয়ে উদ্ভাবনী বিষয়গুলি গবেষণায় গুরুত্ব পেয়েছে।
ডিজিটাল হিউম্যান জেনারেশনের ক্ষেত্রে অপো আলট্রাভাটারের মাধ্যমে যুগান্তকারী পদ্ধতি নিয়ে এসেছে। এটি ড্রাইভেবেল ৩ডি ভার্চুয়াল হিউম্যান তৈরির একটি পদ্ধতি। ডিফিউজ কালার এক্সট্র্যাকশন মডেল ও অথেনটিসিটি-গাইডেড টেক্সচার ডিফিউশন মডেল ব্যবহার করে আলট্রাভাটার একটি ইমেজ বা টেক্সটের লাইনের উপর ভিত্তি করে ড্রাইভেবেল ৩ডি ভার্চুয়াল হিউম্যান তৈরি করতে পারে। এই ভার্চুয়াল হিউম্যানের সাথে বাস্তব মানুষের বৈশিষ্ট্যের দারুণ মিল রয়েছে। এর ফলে একজন মানুষের শরীরের রঙ ও মুখের গড়নের মতো বিষয়গুলির ডিটেইল পৌঁছে যাবে অন্য এক মাত্রায় ও ভার্চুয়াল যোগাযোগ হয়ে উঠবে আরও বাস্তবসম্মত।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তি হলো ইউনিভিএস, যা এই খাতে ভিডিও সেগমেন্টেশনের জন্য প্রথম ইউনিভার্সাল লার্জ মডেল নিয়ে এসেছে।
সিভিপিআর ইভেন্টে ফাইন্ড এক্স৭ আলট্রা উন্মোচিত, এআই ফোন উদ্ভাবনে বেড়েছে গ্রাহকদের আগ্রহ
এই বছর ইভেন্টে নজর কেড়ে নিয়েছে অপো’র ফ্ল্যাগশিপ এআই ফোন ফাইন্ড এক্স৭ আল্ট্রা’র উন্মোচন। সিভিপিআর ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীদের সামনে অপো ফাইন্ড এক্স৭ আল্ট্রার পাশাপাশি অপো এআই ইরেজার ফিচারও উন্মোচন করা হয়। ফোন ব্যবহারকারীরা অপো এআই ইরেজার ফিচার ব্যবহার করে একটি ছবি থেকে অনাকাঙ্খিত কোনো কিছু মাত্র এক ক্লিকে মুছে ফেলে নতুনভাবে কনটেন্ট তৈরি করতে পারবে। এই ফিচার চালুর পর থেকে ফটো এডিটিংয়ে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। প্রত্যেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী প্রতিদিন গড়ে ১৫ বার এই ফিচার ব্যবহার করে এটিকে অন্যতম জনপ্রিয় ফিচারে পরিণত করেছে।
প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দৃঢ় করে এআই ফোনের ব্যবহার সবার জন্য উন্মুক্ত করার প্রচেষ্টা
এই বছরের শুরুতে অপো কৌশলগতভাবে অপো এআই সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে। এর মাধ্যমে অপো এর রিসোর্স ব্যবহার করে এআই সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চায়। এই উদ্যোগ এআইয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শুধু অপো’র গবেষণাগুলোকে একীভূত ও দৃঢ় করেনি, বরং ব্যবহারকারীদেরকে এআই ফোনের সেরা অভিজ্ঞতা দেওয়ার লক্ষ্যেও ভূমিকা রেখেছে। এআই স্মার্টফোন খাতে অপো’র প্রযুক্তিগত ভিত্তিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি এটি চলতি বছরের সিভিপিআর ইভেন্টে উল্লেখযোগ্য গবেষণার ফলাফলও দেখিয়েছে।
জুনের শুরুতে অপো আনুষ্ঠানিকভাবে এআই ফোনকে সবার কাছে সহজলভ্য করার কৌশলের ঘোষণা দেয়। এর লক্ষ্য হলো বছরের শেষ নাগাদ প্রায় ৫০ মিলিয়ন অপো স্মার্টফোনে জেনারেটিভ এআই ফিচার যুক্ত করা। অপো’র সব স্মার্টফোনে এই সুবিধা থাকবে। এই পদক্ষেপ স্মার্টফোনে এআইয়ের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য অপো’র দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতি এবং কৌশলগত লক্ষ্য প্রতিফলিত করে।
ভবিষ্যতে এসব উদ্ভাবনী গবেষণার ফলাফল এবং গুগল, মাইক্রোসফট ও মিডিয়াটেক-এর মতো অংশীদারদের উন্নত প্রযুক্তি এআই ফোনকে সবার জন্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে অপো’র বৈশ্বিক নেতৃত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।