দেশের উত্তরাঞ্চলের দুই জেলা পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় তিনি জেলাসমূহে স্থাপিত শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, জয়সেট সেন্টার, বিটিসিএল অফিস এবং জেলার ডাক বিভাগের প্রধান ডাকঘর পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও, শনিবার (১৩ জুলাই) ঠাকুরগাঁও জেলার ২৬৫ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীর মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি নারী, আমরা যদি তাদেরকে মূল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখি তাহলে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হতে পারবো না।
তিনি বলেন, স্মার্ট কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, গত ৬ মাসে এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা দেখার জন্য ২২টি জেলায় সফর করেছি। দেশের ৪৩টি জেলার ১৩০টি উপজেলায় তথ্য প্রযুক্তিতে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নারী ফ্রিল্যান্সার, নারী আইটি সেবাদাতা, নারী ই-কমার্স, নারী কল সেন্টার এজেন্ট এ চারটি ক্যাটাগরিতে ২৫ হাজার দক্ষ নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প দেওয়ার পর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারের সেবাগুলো প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে একজন ছেলে উদ্যোক্তার পাশাপাশি অবশ্যই একজন নারী উদ্যোক্তাকে কাজ করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
“আজ তার ফলাফল হিসেবে দেশের প্রায় ৯ হাজার ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি সেন্টারে ৯ হাজার নারী উদ্যোক্তা কাজ করছেন। শি পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় আমরা ১০ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরি করেছি, সেই ধারাবাহিকতায় এখন হার পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরির কার্যক্রম চলমান।”
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ২ হাজার স্মার্ট নারী উদ্যোক্তাদেরকে ৫০ হাজার টাকার এককালীন অফেরতযোগ্য অনুদান দিয়েছি এবং আরও ৫ হাজার নারী উদ্যোক্তাকে অনুদান প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে। হার পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় সারা বাংলাদেশের ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তাদের ৫ মাসের প্রশিক্ষণ ও ১ মাসের ইন্টার্নশিপ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে স্মার্ট উপহার একটি করে ল্যাপটপ প্রদান করা হচ্ছে।
পলক বলেন, সফল নারী উদ্যোক্তাদেরকে ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এককালীন অফেরতযোগ্য অনুদান প্রদান করার সুযোগ রয়েছে। উদ্যোক্তাদের স্থায়ী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান শুরু করার জন্য শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে প্রথম ৬ মাস বিনামূল্যে ব্যবসায় করার সুযোগ রয়েছে। এরপর স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানির মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা ৫০ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্ট নিতে পারবে।
ঠাকুরগাঁও জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুবুর রহমান সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালা, ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান বাবলু, ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মজিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মোস্তফা কামাল, হার পাওয়ার প্রকল্পের প্রকল্প উপ-প্রকল্প পরিচালক নিলুফা ইয়াসমিন প্রমুখ।