ছাত্র আন্দোলনে ‘সংহতি’ জানিয়ে বিনিয়োগ হারানো ‘টেন মিনিট স্কুল’সহ স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোয় অর্থলগ্নির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক বলেন, “টেন মিনিট স্কুলসহ যেসব স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সরকারি বিনিয়োগ হারিয়েছিল, তাদের বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে।
“দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হবে, এবং পুনরায় তাদের সঙ্গে সরকারের একত্রে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) যে কাজ করার কথা ছিল, সেটি চালু করা হবে।”
কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন চলার সময়ে গত ১৬ জুলাই টেন মিনিট স্কুলের ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব বাতিল করার কথা জানিয়েছেলেন তখনকার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ওই ঘটনার দুদিন আগে এই স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আয়মান সাদিক চাকরিতে কোটা সংস্কারের পক্ষে ফেসবুকে লিখেছিলেন, “কোটা সংস্কার চাই, মেধা হোক সবচেয়ে বড় কোটা।”
সরকার বিনিয়োগ বাতিল করার পর চলতি মাসের শুরুতে টেন মিনিট স্কুল তাদের সব ধরণের ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার সঙ্গে কারা জড়িত ছিলেন সে বিষয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন সোমবারের মধ্যেই হাতে আসবে বলে জানিয়েছেন নাহিদ।
তিনি বলেন, “এ ঘটনায় সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ যারা জড়িত থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর রোববার প্রথম কর্মদিবসে নাহিদ বলেছিলেন, আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নাম তিনি জানতে চান।
এ বিষয়ে তার কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুশফিকুর রহমানকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ও ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর পাঁচ দিনের মাথায় ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে চালু করা হয়। আর ১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইলে ইন্টারনেট সেবা ফিরে আসে।
এরপর ফের সরকার পতনের আগের দিন ৪ অগাস্ট ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে ফোর-জি নেটওয়ার্ক সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর ৫ অগাস্ট সরকার পতনের আগেও কয়েক ঘণ্টা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ থাকে।
এক প্রশ্নের জবাবে আইসিটি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমাদের যে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টটি রয়েছে, তার যে ধারাগুলো নিয়ে সমালোচনা রয়েছে, সে ধারাগুলো নিয়ে আমাদের পুনর্বিবেচনা করতে হবে। এবং তরুণদের ব্যাপকভাবে এই মন্ত্রণালয়ের সাথে যুক্ত করতে হবে। সেজন্য দেশে এবং দেশের বাইরেও যারা প্রযুক্তি দক্ষ এবং নতুন ধরনের কাজে আগ্রহী আছে এমন জনবল নিয়ে একটা স্পেশাল টিম গঠন করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানান তিনি।