আবারো বাড়ছে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক। সূত্রমতে বিদ্যমান শুল্ক হারের ওপর আরো তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো এসআরও জারি হয়নি।
অবশ্য পরিচয় প্রকাশ না করে মোবাইল ফোনে কথা বলা ও সেলুলার ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ ফের বাড়নোর পরিকল্পনার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাদের মতে এই সম্পূরক শুল্কের কল্যাণে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে ১ হাজার কোটি টাকা।
এমনটি হলে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জ মিলিয়ে মোট কর বর্তমান ৩৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকেরা। প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা অন্তবর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, এমনটা করা হলে এবার তারা রাজপথে নামবেন। ধর্মঘটের ডাক দেবেন।
এই পরিকল্পনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েয়ে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এনবিআর এর উপর ফ্যাসিবাদ সরকারের প্রেতাত্মা ভর করেছে বলেই নতুন করে গ্রাহকদের ওপর অনৈতিকভাবে সম্পূরক শুল্ক জারি করতে যাচ্ছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে তা না হলে তারা গ্রাহক সমাজ ,নাগরিক সমাজ এবং সকল দলমত নির্বিশেষে রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন।
একইভাবে এমন পরিকল্পনার সমালোচনা করে বিডিজবস সিইও এবং ভয়েস ফর রিফর্ম সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর বলেছেন, অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে ইন্টারনেটকে বিলাসী কিংবা তামাকের মতো ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
রবি’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এটা এনবিআরএর একটি রুটিন অনুশীলন।এই অপারেটররা কর ফাঁকি দেয় না বলেই রাজস্বের নিশ্চয়তায় তাদের ওপর চাপ দেয়া হয়। অন্য কোনো খাত এত সহজে রাজস্ব দিতে পারে না!
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বাজেটের এত আগেই এ সিদ্ধান্ত ব্যতিক্রম উল্লেখ করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, এটি মোটেই বাড়ানো উচিত নয়।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান মনে করেন, শুল্ক বাড়ালে মানুষ মোবাইলে কথা বলা কমাতে পারে এবং এতে রাজস্ব আরও কমে যেতে পারে।
মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি ১০০ টাকার রিচার্জ বা ইন্টারনেট খরচের বিপরীতে গ্রাহককে কর হিসেবে ৩৯ টাকা দিতে হয়। অর্থাৎ গ্রাহক ব্যবহার করতে পারেন ৬১ টাকা। নতুন করহার কার্যকর হলে প্রতি ১০০ টাকায় কর বাবদ কেটে রাখা হবে ৪২ টাকা, আর ব্যবহারযোগ্য টাকা কমে দাঁড়াবে ৫৮ টাকায়।