মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটককে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে তাদের একজন মার্কিন মালিক খুঁজে নিতে হবে, অথবা যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে এই জনপ্রিয় যোগাযোগমাধ্যম।
মার্কিন মালিক হিসেবে ইলন মাস্কের নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। যদিও টিকটকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি ‘বানানো গল্প’। কিন্তু মার্কিন গণমাধ্যমের দাবি, বেইজিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার জন্যই টিকটক কেনার দৌড়ে মাস্ক সবচেয়ে এগিয়ে।
গতকাল মঙ্গলবার ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাস্কের কাছে টিকটক বিক্রি করতে গোপন বৈঠক করছে বেইজিং।
টিকটকের চীন-ভিত্তিক মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। ইসরায়েলি গণহত্যা নিয়ে কনটেন্ট সেন্সর না করায় টিকটককে ‘ইহুদী-বিদ্বেষী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন অনেক মার্কিন রাজনীতিবিদ। টিকটকের মাধ্যমে চীন সরকার মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে, আদালতে এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় প্রশাসন।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর মার্কিন কংগ্রেস একটি বিল পাস করে যা আইনে পরিণত করেন জো বাইডেন। সেই আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা কোনো মার্কিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকতে হবে। অথবা ১৯ জানুয়ারি থেকে দেশটিতে টিকটকের অস্তিত্ব থাকবে না।
টিকটকের পক্ষ থেকে আপিল করা হলেও পরে এই আইন বহাল রাখার রায় দেয় মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট।
সিএনএন, ব্লুমবার্গসহ বেশ কিছু মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি, উভয়ের সঙ্গেই সুসম্পর্ক থাকায় ইলন মাস্কের হাতেই টিকটকের মালিকানা যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
সিএনএন জানায়, বৈদ্যুতিক গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার মাধ্যমে চীনে বড় বিনিয়োগ রয়েছে মাস্কের। এর আগে বহুবার চীনের প্রশংসাও করেছেন মাস্ক। প্রকাশ্যে চীন-বিরোধী অবস্থান নেওয়া ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্যতা থাকলেও বেইজিংয়ের সবচেয়ে আস্থাভাজন মার্কিন ব্যবসায়ী মাস্কই।
সিএনএনের প্রতিবেদনে প্রযুক্তি বিশ্লেষক ড্যান ইভস বলেন, ‘বেইজিংয়ের কাছে প্রার্থী একজনই। মাস্ক। এ ছাড়া, তিনি টিকটকের মালিকানা নিলে (তার অপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) এক্স-এর মূল্যমান দ্বিগুণ হয়ে যাবে রাতারাতি।’
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের প্রায় ১৭ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলস ডজার্সের সাবেক মালিক ফ্র্যাঙ্ক ম্যাককোটের নেতৃত্বে মার্কিন ধনকুবেরদের একটি দল গত সপ্তাহে টিকটককে কিনে নিতে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও পাঠিয়েছে। কিন্তু সেই প্রস্তাব নাকচ করেছে বাইটড্যান্স।