রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) আবাসিক হলগুলো আবারও সংবাদের শিরোনামে। তবে, এইবার কোনো কৃতিত্বের জন্য নয়, বরং হলের আশেপাশে গাঁজার গাছ পাওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরেই হলগুলোর আশেপাশে কিছু গাছ দেখা যাচ্ছিল, যেগুলোকে শিক্ষার্থীরা আগাছা মনে করত। তবে, সম্প্রতি কয়েকজন শিক্ষার্থী ভালোভাবে লক্ষ্য করে নিশ্চিত হন যে গাছগুলো আসলে গাঁজার গাছ। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও নবাব সিরাজ উদ-দৌলা হলের সামনে গিয়ে দেখা যায়,শিক্ষার্থীরা এসব গাছ উৎসুকভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এসব গাছ আসলেই গাজার কিনা যাচাই করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিকট পাঠানো হয়।
এই বিষয়ে একজন শিক্ষার্থী তার বক্তব্যে বলেছেন, “গাজার গাছ ক্যাম্পাসে পাওয়ার ঘটনাটি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এটি শুধু একটি উদ্ভিদ নয়, বরং এটি আমাদের শিক্ষার পরিবেশ এবং ক্যাম্পাসের শান্তিপূর্ণ আবহাওয়াকে নষ্ট করতে পারে। গাজার গাছের উপস্থিতি কিছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভুল বার্তা পাঠাতে পারে এবং এটি অনৈতিক কার্যকলাপকে উৎসাহিত করতে পারে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করছি যেন তারা দ্রুত এই গাছটি অপসারণ করে এবং ক্যাম্পাসকে একটি নিরাপদ ও সুস্থ শিক্ষার পরিবেশ হিসেবে বজায় রাখে। আমাদের লক্ষ্য শুধু পড়াশোনা নয়, বরং একটি সুস্থ ও ইতিবাচক পরিবেশে নিজেদের গড়ে তোলা।”
গাছগুলো গাজার গাছ কিনা জানতে চাইলে এগ্রোনমি বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ মাসুম বলেন, এগুলো আসলে বুনো গাজা। যা গাজা গাছের এক ধরনের প্রজাতি। এই গাছগুলোকে আঞ্চলিক ভাষায় ভাংয়ের গাছ বলা হয়। সচারাচর গাজার মতো নেশার সৃষ্টি না করলেও এটা বেশ নেশার উদ্রেক ঘটাতে সক্ষম। আসল গাজার সাথে এই গাছগুলোর পাতাও মিশিয়ে বিক্রি করা হয়।
এছাড়াও গাছগুলো বোটানি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক ড. মো:ইলিয়াস হোসাইন বলেন, এগুলো গাজা গাছের ওয়াইল্ড ভ্যারাইটি। সচারাচর গাজা হিসেবে যে গাছের পাতা ব্যবহার করা হয় এগুলো সেটা নয়। এটা বন্য জাতের গাজা। তবে নেশার সৃষ্টি করা কিনা বলা মুশকিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো: আরফান আলী বলেন,এই সব গাছের বিষয়ে আগে কোন তথ্য আমাদের কাছে আসে নি। আমরা প্রশাসন থেকে সে গুলো তুলে ফেলার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।