অনেক সময় হ্যাকাররা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নকল বা ফেক ওয়েবসাইট তৈরি করে ইন্টারনেট জাল পেতে রাখে। এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে অনলাইন ব্যবহারকারীদের সর্বশান্ত হতে হয়।
আসল ও নকল ওয়েবসাইটের মধ্যে পার্থক্য না বুঝে অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন।
গুগলে কোনো ওয়েবসাইট খুঁজলে, এমন অসংখ্য ভুয়া সাইট দেখতে পাবেন। সেগুলো কীভাবে চিনবেন, তা জেনে রাখা ভালো।
খুবই চেনা বা নামী কোনও ব্র্যান্ডের নামের বানানে সামান্য হেরফের ঘটিয়েই সাইবার অপরাধীরা তৈরি করে ফেলছে ভুয়া না ফেক ওয়েবসাইট। সেই সাইটে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে নেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করলেই গ্রাহকের ওই অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে সমস্ত টাকা।
এভাবেই অসংখ্য মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে হোটেল বুকিং বা যেকোনও নামী শপিং সাইটের নাম ভাঙিয়ে ইউআরএল বদলে দিব্যি ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা হচ্ছে। তা দেখতেও একেবারেই আসলের মতো। তা হলে আসল আর নকলের পার্থক্য করবেন কীভাবে?
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, এমন কিছু উপায় আছে, যা দেখে নকল ওয়েবসাইটি আলাদা করে চেনা যাবে। সাধারণ মানুষ সেগুলো জানেন না বলেই সহজেই প্রতারিত হচ্ছেন, কী কী সেই উপায়?
১. সাইবার অপরাধীরা পরিচিত ব্র্যান্ডের নামের সামান্য হেরফের ঘটিয়ে ‘ডোমেইন হোস্টিং’ সংস্থার কাছ থেকে নতুন ওয়েবসাইট কিনে ফেলছে। ওই পরিচিত ব্র্যান্ডের মতোই অবিকল ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলছে তারা। তার পরে ওই ওয়েবসাইটের লিংক ই-মেইল করে দিচ্ছে বিভিন্ন জনকে। যদি দেখেন আপনার মেইলবক্সে অচেনা কোনও আইডি থেকে লিংক পাঠানো হয়েছে, তা হলে তা ক্লিক করবেন না। যতই প্রলোভন দেখানো হোক, ইমেইলে অজানা আইডি থেকে আসা কোনও ওয়েবসাইটের লিংক খোলা উচিত হবে না।
২. যে সাইটটি খুলছেন, তার ইউআরএল-এ ‘এইচটিটিপিএস’ আছে কি না, দেখতে হবে। কোনও ওয়েবসাইটে যদি ‘এইচটিটিপি’-র সঙ্গে ‘এস’ না থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, সেই ওয়েবসাইটটি ভুয়া।
৩. আর্থিক লেনদেন করার আগে ওয়েবসাইটটি ভুয়া কি না তা দেখতে ই-মেইলে আসা লিংকটি গুগলে সার্চ করলেই বোঝা যাবে। গুগলে ওই ওয়েবসাইটের নামের বানান ঠিক আছে কি না প্রশ্ন করবে। কিছু প্রশ্ন করা মানেই সেই ওয়েবসাইটটি সন্দেহজনক।
৪. ভুয়া ওয়েবসাইটের ইউআরএলে ভুল বানান, স্মাইলি বা কোনও সাঙ্কেতিক চিহ্ন থাকতে পারে। সেটা দেখে নিতে হবে।
৫. এমন অনেক ওয়েবসাইট দেখবেন, যেখানে মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনলাইনে হোটেল বুকিং বা কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সাইট সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজতে গেলে এমন মোবাইল নম্বর দেওয়া ওয়েবসাইট পাবেন। সেগুলো বেশির ভাগই ভুয়া। সাইবার অপরাধীরা তাদের অ্যালগরিদম দিয়ে এমন নম্বর গ্রাহকদের চোখের সামনে রাখেন, যাতে নম্বরটিতে ফোন করলেই তাদের পাতা ফাঁদে পা দিতে পারেন গ্রাহকেরা।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞা সতর্ক করে জানিয়েছে, এখন মোবাইলেই টাকা-পয়সার লেনদেন বা অনলাইন শপিং বেশি হয়। আর মোবাইলের ছোট স্ক্রিনে কোনও ওয়েবসাইটের ইউআরএল দেখা বা তার বানান পরীক্ষা করার মতো ধৈর্য কারও থাকে না। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। তাই মোবাইলে কেনাকাটা বা নেট ব্যাংকিং করার সময় সতর্ক থাকতে হবে।