কর্মক্ষেত্রে বা পড়াশোনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। নৈমিত্তিক ডিজিটাল টুল হিসেবে এআই চ্যাটবট কয়েক সেকেন্ডে জটিল সব সমাধান দেয়। এআইয়ের উৎকর্ষে নতুন চাকরিপ্রার্থীরা ভয় পেয়ে থাকেন সুযোগ ও সম্ভাবনা কমে যাওয়ার। তবে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় এআই টুলের ব্যবহার জানাও এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাকরির বিজ্ঞাপন চোখে পড়ার পর থেকে সাক্ষাৎকারে নিজের সর্বোচ্চ দেয়া ও কাঙ্ক্ষিত বেতন সম্পর্কে পরিচ্ছন্ন ধারণা পেতে উপযুক্ত সহকারী হতে পারে এআই। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উপযুক্ত চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে এআইয়ের সহায়তা কীভাবে নেয়া যায় সে বিষয়ে বলা হয়েছে।
ফলপ্রসূ গবেষণা
চ্যাটজিপিটি ও পারপ্লেক্সিটির মতো এআই টুল চাকরি সম্পর্কিত গবেষণাকে দ্রুত ও সহজ করে তুলতে পারে। চাকরির জন্য আবেদন করার আগে এআই টুল ব্যবহার করে কোম্পানির তথ্য, সংস্কৃতি ও শিল্প খাতে এর প্রবণতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যেতে পারে। এতে নিজের যোগ্যতা ও লক্ষ্যের সঙ্গে মানানসই কোম্পানি খুঁজে বের করা সহজ হবে। তাছাড়া এসব তথ্য সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পেলে নিজের প্রস্তুতিতেও সাহায্য করবে।
নিজস্বতা বজায় রাখা
সিভি বা কভার লেটার আরো উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে এআই টুল। তবে মনে রাখা জরুরি যে নিয়োগকর্তারা স্বতন্ত্রতা ও সাবলীল ব্যক্তিত্ব পছন্দ করেন। এসব ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় এআইয়ে নির্ভরতা আবেদনপত্রকে সাধারণ ও একঘেয়ে করে তুলতে পারে। এআইয়ের সহায়তা নিয়ে আবেদনপত্রের খসড়া তৈরি করা যেতে পারে। তবে অভিজ্ঞতা ও পছন্দের বিষয়ের ক্ষেত্রে নিজস্বতা বজায় রাখা জরুরি। মূলত এ দিকটিই অন্য প্রার্থীদের থেকে আপনাকে আলাদা করবে।
বাছাই প্রক্রিয়ায় উতরানো
অনেক কোম্পানি সিভি বাছাইয়ের জন্য এআই-চালিত অ্যাপ্লিক্যান্ট ট্র্যাকিং সিস্টেম বা এটিএস ব্যবহার করে। ফলে সিভি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে তা এটিএস-বান্ধব হয়। এজন্য সিভিতে এমন কিছু কি-ওয়ার্ড থাকা জরুরি, যেগুলোর কোম্পানির চাহিদার সঙ্গে মিল থাকে। এআই টুল ব্যবহার করে দক্ষতা, অভিজ্ঞতাসহ বাকি বিষয়গুলো এটিএস-বান্ধব করে সাজিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য নেয়া যেতে পারে। তবে উপস্থাপনা যেন যান্ত্রিক না হয় সে বিষয়ে নজর দেয়া জরুরি।
প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়তা
সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতির জন্য দারুণ সহায়ক টুল হতে পারে এআই। এআই-চালিত প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মক ইন্টারভিউয়ে অংশ নেয়া যেতে পারে। কারণ ইন্টারেক্টিভ এসব টুল উত্তরের প্রতিক্রিয়া বা আরো কীভাবে ভালো করা যেতে পারে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ চ্যাটজিপিটির ভয়েস মোড ব্যবহার করে প্রকৃত সাক্ষাৎকার পরিস্থিতি তৈরি করে অনুশীলন করা যায়, যা আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করবে। তবে শুধু এআইয়ের সঙ্গে অনুশীলন না করে মানুষের সঙ্গেও করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আরো বৈচিত্র্যময় প্রতিক্রিয়া ও পরামর্শ পাওয়া যায়।
উপযুক্ত বেতন নির্ধারণ
বেতন নিয়ে আলোচনা করার আগে গ্লাসডোর বা পে-স্কেলের মতো এআই-চালিত প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত পদের জন্য উপযুক্ত বেতন কাঠামো সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। এসব প্লাটফর্ম কোম্পানির মান, অঞ্চলভেদে নানা পার্থক্য ও বেতন প্রবণতা সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টিও দিয়ে থাকে। বেতন নিয়ে আলোচনা করার সময় বিষয়গুলো কার্যকর উত্তর ও ব্যাখ্যা দিতে যথেষ্ট সাহায্য করবে।