বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবার ‘লেইকা ওয়ান’ ক্যামেরা প্রদর্শনের ১০০ বছর পূর্ণ হয়েছে সম্প্রতি। পকেটসাইজ আর রেট্রো-স্টাইল ক্যামেরার জন্য খ্যাত জার্মানিভিত্তিক এ কোম্পানি। ১৯২৫ সালে লিপজিগ স্প্রিং ফেয়ারে প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আনা হয় এটি।
জার্মানির ওয়েটজলারে ১৮৬৯ সালে আর্নস্ট লেইটজ প্রতিষ্ঠিত করেন লেইকা। শুরুতে কোম্পানিটি মাইক্রোস্কোপ ও অপটিক্যাল লেন্স তৈরির কাজ করত। কিন্তু লেইকা ওয়ানের আগমনের মধ্য দিয়ে বদলে যায় ইতিহাস। ছোট, উচ্চমানের ক্যামেরার যুগে প্রবেশ করে বিশ্ব।
কোম্পানিটি বলছে, এক শতাব্দী পেরিয়েও জার্মানির ফ্রাংকফুর্টের উত্তরের শহর ওয়েটজলারে এখনো হাতে গড়া হয় প্রতিটি লেইকা ক্যামেরা। ধুলোবিহীন কক্ষে ৭০ জন কারিগর অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ছয় শতাধিক যন্ত্রাংশ জোড়া দেন হাতে হাতে। ছোট ছোট স্ক্রু লাগানোর জন্য তারা ব্যবহার করেন বিশেষ ধরনের স্ক্রু-ড্রাইভার এবং সংবেদনশীল যন্ত্রাংশ ধরার জন্য থাকে অ্যান্টি-স্ট্যাটিক টুইজার।
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে শুরু করে জীবনের নিস্তব্ধ কোণে লেইকা হয়ে ওঠে রবার্ট ক্যাপা এবং হেনরি কার্টিয়ার-ব্রেসনদের মতো কিংবদন্তি আলোকচিত্রীদের পছন্দের হাতিয়ার। লাল বিন্দুসংবলিত ক্যামেরাটি আজও টিকে আছে এবং সনি, ক্যানন ও নিকনের মতো জাপানি জায়ান্টদের ভিড়ে নিজস্ব জায়গা ধরে রেখেছে।
ব্রিটিশ শিল্পী অ্যালান স্ক্যালার ডিজিটাল লেইকা এম১১-এর মনোক্রোম সংস্করণ ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, ‘লেইকার সঙ্গে কাজ করলে আরো ভালো ফটোগ্রাফার হয়ে উঠবেন। এটি দিয়ে অ্যাপারচার, শাটার স্পিড, আলোর সংবেদনশীলতা ম্যানুয়ালি এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, যা স্বয়ংক্রিয় যেকোনো যন্ত্রের চেয়ে দ্রুত।’
কোম্পানিসংশ্লিষ্টরা বলছে, লেইকা এখনো কিছু অ্যানালগ ক্যামেরা তৈরি করে, যার একটি এম১১-এর কাছাকাছি মডেল এম৬।
লেইকার প্রধান নির্বাহী ম্যাথিয়াস হার্শ জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কোম্পানির বিক্রি রেকর্ড প্রায় ৬০ কোটি ইউরো ছুঁয়েছে। প্রতি বছর প্রবৃদ্ধি হচ্ছে প্রায় ১০ শতাংশ হারে।