পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম প্রান্তেও আজ ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে স্টারলিংক। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের এই প্রকল্প একে একে উৎক্ষেপণ করছে হাজার হাজার স্যাটেলাইট, যার মাধ্যমে মিলছে উচ্চগতির ও কম ল্যাটেন্সির ইন্টারনেট। কিন্তু এখন আর স্টারলিংক একা নয়, একে ঘিরে উঠে আসছে একাধিক প্রতিযোগী। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট দুনিয়ায় চলছে এক নীরব যুদ্ধ।
ওয়ানওয়েব: যুক্তরাজ্যের স্যাটেলাইট সাম্রাজ্য
স্টারলিংকের সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে ওয়ানওয়েব। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই কোম্পানিটি ইতিমধ্যে ৬০০ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে এবং অনেকটা নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
২০২৩ সালে তারা ইউটেলস্যাট এর সঙ্গে একীভূত হয়। এখন তারা বিশ্বের বহু দুর্গম এলাকায় ১৯৫ Mbps পর্যন্ত গতি দিতে সক্ষম। এদের লক্ষ্য—স্কুল, হাসপাতাল, সরকারি অফিস ও প্রত্যন্ত অঞ্চল।
অ্যামাজনের কুইপার প্রকল্প: প্রযুক্তির এক নতুন অধ্যায়
ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন তাদের ‘Project Kuiper’ এর আওতায় প্রাথমিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ শুরু করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ৩,০০০ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে।
অস্ট্রেলিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে ইন্টারনেট দিতে ইতিমধ্যেই তারা চুক্তি করেছে স্থানীয় ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের সঙ্গে। অ্যামাজনের শক্তিশালী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও ডিস্ট্রিবিউশন চেইন একে পরিণত করতে পারে স্টারলিংকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে।
ভায়াস্যাট ও হিউজেসনেট: জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটের প্রাচীন পথ
মার্কিন প্রতিষ্ঠান ভায়াস্যাট ও হিউজেসনেট দীর্ঘদিন ধরে ৩৬,০০০ কিমি উচ্চতায় জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে ইন্টারনেট দিচ্ছে। তবে লেটেন্সি বেশি হলেও, বিস্তৃত কাভারেজ এখনো এদের একটি বড় সুবিধা।
ভায়াস্যাট সম্প্রতি ইনমারস্যাট অধিগ্রহণ করেছে, যার ফলে এদের বৈশ্বিক কাভারেজ আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
ইউরোপ ও চীনও পিছিয়ে নেই
-
ইইউ’র আইরিস² প্রকল্প (IRIS²) ২০২৭ সালের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে। মাল্টি-অরবিট সিস্টেম ব্যবহার করে এটি তৈরি হবে এক নিজস্ব স্যাটেলাইট ইকোসিস্টেম, যা স্টারলিংকের ওপর নির্ভরতা কমাবে।
-
চীনের স্পেসসেল প্রজেক্ট রাষ্ট্রীয় মালিকানায় স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক গড়ছে।
-
অস্ট্রেলিয়ার NBN স্কাই মাস্টার ইতিমধ্যেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট দিচ্ছে।