বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে খুব কমই নিজেদের প্রসেসর তৈরি করে থাকে। এখন পর্যন্ত অ্যাপল, গুগল, হুয়াওয়ে ও স্যামসাং নিজেদের চিপ ডিজাইন করেছে। এবার এই তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট শাওমি। প্রতিষ্ঠানটি চলতি মাসেই বাজারে আনতে যাচ্ছে তাদের প্রথম ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন চিপ-এক্সরিং ০১।
স্যামসাংয়ের আসন্ন এক্সিনস ২৬০০ চিপের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে শাওমির এই নতুন প্রসেসর।
সম্প্রতি শাওমির প্রধান নির্বাহী লেই জুন ‘এক্সরিং ০১’ চিপটি উন্মোচন করেন। এটি তৈরি হয়েছে এআরএমের আর্কিটেকচারের ভিত্তিতে এবং চিপটি তৈরি করেছে বিশ্বখ্যাত সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি। চিপটি তৈরিতে টিএসএমসি তাদের দ্বিতীয় প্রজন্মের ৩ ন্যানোমিটার প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, পারফরম্যান্সে এটি কোয়ালকমের সর্বাধুনিক স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলাইট চিপকেও পেছনে ফেলবে। চার বছর ধরে চিপটি তৈরি করতে প্রায় ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে এবং এতে কাজ করেছে ২ হাজার ৫০০-এর বেশি গবেষক ও ইঞ্জিনিয়ার। এই চিপে ব্যবহৃত হয়েছে ১৯ বিলিয়নেরও বেশি ট্রানজিস্টর।
শাওমির প্রথম ইন-হাউস চিপ ছিল ‘সার্জ এস ১ ’, যা ২০১৭ সালে ‘মি ৫ সি’ ফোনে ব্যবহৃত হয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালে এমডব্লিউসি ইভেন্টে তারা ‘সার্জ এস ২’ ঘোষণা করলেও সেটি বাজারে আনা হয়নি। চিপটি ‘মি ৬ এক্স’ ফোনে ব্যবহার করার কথা ছিল, তবে শেষ পর্যন্ত ব্যবহার করা হয় স্ন্যাপড্রাগন ৬৬০।
ফাঁস হওয়া বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী, গিকবেঞ্চ ৬-এ এক্সরিং ০১ চিপটি সিঙ্গেল-কোরে ৩ হাজার ১১৯ এবং মাল্টিকোরে ৯ হাজার ৬৭৩ পয়েন্ট অর্জন করেছে। এটি স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলাইটের সমমানের পারফরম্যান্স এবং স্যামসাংয়ের সেরা চিপ এক্সিনস ২৪০০ থেকেও এগিয়ে।
উল্লেখ্য, এক্সিনস ২৪০০ ছিল ৪ ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি এবং এটি স্যামসাংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী চিপ হিসেবে পরিচিত ছিল। তাই শাওমির এই অর্জন নিঃসন্দেহে প্রযুক্তি দুনিয়ায় একটি বড় মাইলফলক।
এদিকে গুঞ্জন রয়েছে, স্যামসাং এ বছর তাদের প্রথম ৩ ন্যানোমিটার স্মার্টফোন চিপ এক্সিনস ২৫০০ বাজারে আনতে চেয়েছিল, যার কোডনেম ছিল ‘ড্রিম চিপ’। তবে উৎপাদনে কম সফলতা পাওয়ায় পরিকল্পনাটি স্থগিত করা হয়।
এখন শোনা যাচ্ছে, স্যামসাং আগামী জুলাইয়ে গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ৭-এর সঙ্গে এই চিপ উন্মোচন করতে পারে। তবে এই তথ্য কতটা সত্য, তা সময়ই বলবে।