একসময় ইন্টারনেটে ঢুকে কোনো তথ্য খুঁজতে একমাত্র ভরসা ছিল সার্চ ইঞ্জিন। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্লাটফর্ম গুগল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য এআই টুলের আগমনে এখন তথ্য খোঁজার বিকল্প মাধ্যমে পরিণত হয়েছে এসব প্লাটফর্ম। ফলে গুগলের সার্চ আধিপত্য কমে যাচ্ছে বলে ধারণা করেন অনেক সার্চ বিশেষজ্ঞ, বিশ্লেষক এমনকি ব্যবহারকারীরাও। কিন্তু ব্যবহারকারীরা বড় সংখ্যায় গুগল ছেড়ে এআই সার্চ ইঞ্জিন বা চ্যাটবটের দিকে ঝুঁকছে, এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি সাম্প্রতিক গবেষণায়। খবর সার্চ ইঞ্জিন ল্যান্ড।
প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালে চ্যাটজিপিটির তুলনায় গুগলে বিভিন্ন বিষয় সার্চ করা হয় প্রায় ৩৭৩ গুণ বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যদি চ্যাটজিপিটিতে প্রতিদিন ১০০ কোটি বিষয়ও সার্চ হয়, তবু সার্চ ইঞ্জিনের বাজারে এর হিস্যা ১ শতাংশের কম হবে। সেমরাশের এক গবেষণা অনুযায়ী, চ্যাটজিপিটি প্রশ্নের ৪৬ শতাংশ উত্তর দেয় ওয়েব সার্চ ব্যবহার করে। এছাড়া চ্যাটজিপিটিতে ৩০ শতাংশই এমন প্রশ্ন বা অনুরোধ থাকে, যা সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনেও করা হয়।
সার্চ ইঞ্জিন ল্যান্ড বলছে, গত বছর গুগল পাঁচ ট্রিলিয়ন বা পাঁচ লাখ কোটির বেশি সার্চ পরিচালনা করেছে, যা প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার কোটি সার্চের সমান। ফলে গুগলের বাজার হিস্যা ৯৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অন্যদিকে চ্যাটজিপিটি প্রতিদিন আনুমানিক ৩ কোটি ৭৫ লাখ অনুরোধ পায়, যা বাজারের দশমিক ২৫ শতাংশ। এ সংখ্যা মাইক্রোসফট বিং (৪ দশমিক ১০ শতাংশ), ইয়াহু (১ দশমিক ৩৫ শতাংশ) এবং ডাকডাকগোর (দশমিক ৭৩ শতাংশ) চেয়েও কম।
তবে গুগলে বেশি সার্চ হওয়া মানে এই নয় যে মানুষ বেশি ওয়েবসাইটে ক্লিক করছে। বাস্তবে ২০২৪ সালে গুগলের আনুমানিক ৬০ শতাংশ সার্চে কোনো ক্লিক পড়েনি। অর্থাৎ তিন ট্রিলিয়নের (তিন লাখ কোটি) বেশি সার্চে ব্যবহারকারীরা কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করেনি।
এদিকে পুরনো সার্চ করার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনছে গুগল। অর্থাৎ কিওয়ার্ড টাইপ করে লিংক, ছবি ও তথ্য খোঁজা এখন আর একই রকম থাকবে না। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি নতুন পরিকল্পনার তথ্য প্রকাশ করেছে টেক জায়ান্টটি। ‘ডিজিটাল এজেন্ট’ নামে এআই চালিত একটি সিস্টেম ওয়েব ঘেঁটে ব্যবহারকারীর আশপাশের পরিবেশ, পছন্দ ও রুচির ওপর ভিত্তি করে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে, অনেকটা চ্যাটজিপিটির মতোই।