চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধংদেহী মনোভাব পুরো প্রযুক্তিবিশ্বকেই বিনাশের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। আর এমন পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়েই রাশিয়া আগে থেকেই নিজস্ব নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী মাক্সিম আকিমভ।
গত মাসে হুয়াওয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে মার্কিন কোম্পানি থেকে হুয়াওয়ের জন্য সরঞ্জাম ও সফটওয়্যার সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মার্কিন প্রশাসন এখন তাদের মিত্রদেরও এমন পদক্ষেপ নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে তাদের ফাইভজি নেটওয়ার্ক অবকাঠামো নির্মাণে হুয়াওয়েকে বয়কট করেছে।
তবে হুয়াওয়ের নেটওয়ার্ক সরঞ্জামে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের কারণে দেশটির মাইক্রোসফট, অ্যাপল, গুগলের মতো বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানিও বেশ বিপাকে পড়েছে।
বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া হুয়াওয়ের সঙ্গে সম্প্রতি বড় ধরনের চুক্তি করেছে রাশিয়া। গত সপ্তাহে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে উপনীত হয়েছেন। চুক্তির আওতায় রাশিয়ার বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠান মোবাইল টেলিসিস্টেম পিজেএসসির ফাইভজি অবকাঠামো নির্মাণ করে দেবে হুয়াওয়ে। যদিও এটি একটি পাইলট প্রকল্প।
হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আকিমভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন যা করছে তাতে তারা পুরো বিশ্বকেই বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এ বিপর্যয় আমাদের সবাইকে আঘাত করবে।
আকিমভ রাশিয়ার টেলিকম, পরিবহন ও ডিজিটাল অর্থনীতির অবকাঠামো দেখভাল করেন। ৭ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি এসব কথা বলেন।
হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে আচরণকে ‘কয়েকটি দেশের একতরফা বিরাগপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, এর ফলাফল হবে মারাত্মক।
রাশিয়ার নিজস্ব ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরির ব্যাপারে আকিমভ বলেন, একটি সার্বভৌম ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্য হলো, বাইরে থেকে কখনো রাশিয়ার নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হলে সৃষ্ট সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা এড়ানো। এটি বাকি বিশ্ব থেকে দেশকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার কোনো প্রকল্প নয়।