দেশে পঞ্চম প্রজন্মের (ফাইভ-জি) মোবাইল ফোন সেবা চালুর উদ্যোগ হিসেবে আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়নের দিকে এগোচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) জাকির হোসেন খাঁন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এখনো ফোর-জি, এমনকি দেশের অধিকাংশ জায়গায় থ্রি-জিও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে ফাইভ-জি হবে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। আগে কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে।
জাকির হোসেন বলেন, ফাইভ-জি সেবা চালু করতে পরিকল্পনা ও একটি নীতিমালা প্রণয়নে সরকারের প্রতিনিধি, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, অপারেটরগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিশন গত ৪ আগস্ট একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি বাংলাদেশে এই প্রযুক্তি চালু করতে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা (ফাইভ-জির রূপরেখা, সম্ভাব্য তরঙ্গ, তরঙ্গমূল্য এবং বাস্তবায়ন সময়কাল ইত্যাদি) প্রণয়ন করবে। সেইসঙ্গে একটি নীতিমালাও তৈরি করবে।
মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবার সর্বশেষ সংস্করণ ফাইভ-জি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে ফোর-জি প্রযুক্তির চেয়ে নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বহুগুণ বাড়ানো যায়। বর্তমানে প্রচলিত মোবাইল গ্রাহক হিসেবে শুধু মানুষকে বিবেচনা করা হলেও ফাইভ-জি প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সেবা হলো ‘ইন্টারনেট অব থিংকস-আইওটি’, যেখানে যন্ত্র থেকে যন্ত্রে যোগাযোগের জন্য ব্যবহূত ডিভাইসগুলোকেও গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হবে। দক্ষিণ কোরিয়া, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই প্রযুক্তিতে প্রবেশ করেছে।
প্রতিটি দেশেই অপারেটরকে ৩৩০০-৪২০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে প্রায় ১০০ মেগাহার্টজ এবং মিলিমিটার ওয়েভের জন্য ২৬-২৮ গিগাহার্টজ বা তদূর্ধ্ব ব্যান্ডে ৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু কিছু দেশ ২.৫ গিগাহার্টজ (২৫০০-২৬৯০ মেগাহার্টজ) ব্যান্ডে ফাইভ-জির জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮ অনুযায়ি ২০২১-২৩ সালের মধ্যে দেশে ফাইভ-জি চালু প্রতিশ্রুতি রয়েছে।