পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক কাভারেজ না থাকায় ১৬ বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসান টেলিটকে।
পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক কাভারেজ নেই। গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৫৩ লাখ। ১৬ বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসান। বড় বিনিয়োগও মিলছে না, তাই খুঁড়িয়ে চলছে টেলিটক। রাষ্ট্রায়ত্ব এই টেলিকম কোম্পানিকে বাঁচাতে এখনই বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগসহ অংশীদারিত্ব প্রয়োজন বলছে গবেষণা সংস্থা পিআরআই।
গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৭ কোটি ৯০ লাখ। রবি আজিয়াটার ৫ কোটি ৯ লাখ। বাংলালিংকের ৩ কোটি ৫২ লাখ। এই তিন বেসরকারি কোম্পানির ১৬ কোটি ৫২ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিকম কোম্পানি টেলিটকের গ্রাহক মাত্র ৫৩ লাখের কিছু বেশি।
১৬ বছরেও বাজার অনুযায়ী ব্যবহারকারী বাড়েনি টেলিটকের। কারণ দুর্বল নেটওয়ার্ক। বেসরকারি টেলিকম কোম্পানিগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে টেলিটকের টাওয়ার সক্ষমতা।
এতো কম গ্রাহকের আয় নিয়ে লোকসানের চক্র ভাঙতে পারছে না টেলিটক। দুই অর্থবছর ছাড়া বাকিগুলোতে লোকসান দিয়েছে কোম্পানিটি। মোট লোকসান দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। এভাবে চলতে দেয়ার বিপক্ষে অর্থনীতিবিদরা।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিনিয়োগের যে টাকাটা লাগে সব বাজেট থেকে দিতে হয়। ফোর জি করার সময় সরকার টাকা দিয়েছে এখন ফাইভ জি করার সময়ও সরকার তাদের টাকা দিচ্ছে। এগুলো কেন দিচ্ছে সরকার। কয়জন জনগণ তাদের কাছ থেকে সুবিধা পাচ্ছে। তাদের টাকা দিয়ে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না।
বড় বিনিয়োগ মিলছে না। তাই ধীর পায়ে এগুচ্ছে টেলিটক বলছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, তিন হাজার ছয়শ কোটি টাকা দিয়ে কোনমতে তারা কোরিয়াতে রিটক সম্প্রসারণ করেছে। আমরা প্রকল্প নিয়ে সরকারের কাছে গিয়েছি। এটি অনুমোদন হলে সারাদেশে নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালি হবে।
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এখনো আশাবাদী। জানালেন- কোম্পানির নিজস্ব আয় থেকেই কার্যক্রম চলছে টেলিটকের। ২০২৩ সালে আসতে পারে মুনাফাতেও।
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাব উদ্দিন বলেন, আপনারা বলতে পারেন টেলিটক অনেকদিন থেকেই লসে আছে। সেই লস আর এই লস কিন্তু অন্য জিনিস। নেগেটিভ মানে কমার্শিয়াল টার্মে নেগেটিভ। প্রকৃতপক্ষে কিন্তু পজেটিভ। আমরা তিন হাজার দুইশ থেকে পাঁচ হাজার তিনশ পর্যন্ত সাইড করে ফেলেছি। যদি ইনভেস্টমেন্ট ঠিকঠাক থাকে তাহলে ২০২২-২৩ সালে আমরা মুনাফায় যেতে পারবো।
বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব ছাড়া টেলিটককে মুনাফায় নেয়া সম্ভব নয় বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
আর্থিক চাপ আরো আছে টেলিটকের। থ্রিজি তরঙ্গ বাবদ বিটিআরসি’র পাওনা প্রায় ১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। যা পরিশোধে নিশ্চিত পরিকল্পনা জানাতে পারেনি টেলিটক কর্তৃপক্ষ।