মোবাইল ফোনের বহুমুখী ব্যবহার মানুষের জীবনকে করেছে আরও সহজতর। তবে সম্প্রতি ফোন ব্যবহারে অনেকে নেটওয়ার্ক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এমনকি রাজধানী ঢাকার গ্রাহকরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটওয়ার্ক সমস্যার কথা তুলে ধরছেন। কাউকে ফোন করতে গেলে বা অন্যের ফোন রিসিভ করতে গেলে হঠাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে বা ফোনই করা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এমনকি পাড়ার চায়ের দোকানের আড্ডায় স্থান করে নিচ্ছে মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যার বিষয়টি। সবারই একটাই অভিযোগ-দেশে একের পর এক থ্রি জি, ফোর জি, এমনকি ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালু করেছে মোবাইল অপারেটরগুলো। কিন্তু তারা সঠিকভাবে গ্রাহকদের সেবা দিতে পারছে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে কোম্পানির নাম উল্লেখ করে লিখছেন, ‘গ্রামীণফোন ঢাকায়ও সঠিকভাবে সেবা দিতে পারছে না।’ কিন্তু সত্যিই কী তাই? বিভিন্ন সময় গ্রামীণফোন তাদের সেবার মান বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে সেবার মান বাড়াতে কোম্পানিটির সদিচ্ছা থাকলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে যথাযথ সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায় এ মোবাইল অপারেটর কোম্পানি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) পাঠানো এক চিঠিতে কোয়ালিটি অব সার্ভিস বাড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানায় গ্রামীণফোন। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে যথাযত সহায়তা পাচ্ছে না কোম্পানিটি। যেমন: নেটওয়ার্কের মান উন্নয়নে পরিকল্পনায় সারাদেশে ৮৮৯টি টাওয়ার নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়, যার মধ্যে ২৫০টির বেশি টাওয়ার নির্মাণ করার কথা রাজধানী ঢাকায়।
গ্রামীণফোন নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে লিখিতভাবে নতুন টাওয়ার স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও নিজেরা টাওয়ার স্থাপন করতে পারে না। কারণ আইন অনুযায়ী টাওয়ার কোম্পানিগুলোর এ দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী টাওয়ার কোম্পানির কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় গ্রাহকরা উন্নত নেটওয়ার্ক সেবা পাচ্ছেন না।
এমনকি গ্রাহকদের উন্নত ভয়েস কল এবং ইন্টারনেট সেবা দিতে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার ফাইবার স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানায় গ্রামীণফোন। ইতোমধ্যে তাদের ৪২০০ টাওয়ারে ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে মোট টাওয়ারের ৩৪ শতাংশ এবং ঢাকার শতভাগ টাওয়ারে ফাইবার বসানোর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু ফাইবার কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে গ্রাহকরা অত্যন্ত খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছেন।