ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল সংযুক্তি এবং শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অপরিহার্য। দেশের মানুষকে ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কে নিয়ে আসার জন্য দায়িত্ব নিয়ে আমরা কাজ করছি। তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট সহজলভ্য করতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এক দেশ এক রেটের আওতায় এনেছি। মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি এক দেশ এক রেট হবে বাস্তবায়ন করা হবে।’
‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষে বুধবার (১৭ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব-উল-আলম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
মোস্তাফা জব্বার বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবেসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ‘১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়নের সদস্যপদ গ্রহণ, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, টিঅ্যান্ডটি বোর্ড গঠন ও কারিগরি শিক্ষা প্রসারে গৃহীত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছিলেন।’
১৭ মে বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের এক অনন্য দিন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি জাতির জন্য এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পঁচাত্তর পরবর্তী ছয় বছরের লড়াই, দুঃখ-কষ্ট, নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মতো দুঃসাহসিক ও দূরদৃষ্টি-সম্পন্ন কর্মসূচি না নিলে আজকের এই বাংলাদেশ আমরা পেতাম না।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে দেশে টু-জি, ২০১৩ সালে থ্রি-জি, ২০১৮ সালে ফোর-জি এবং ২০২১ সালে ফাইভ-জি প্রচলন করেন।’
সভাপতির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, প্রযুক্তি দুনিয়ায় নেতৃত্ব প্রদানকারী বাংলাদেশ।’
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মূল প্রবন্ধে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্মার্ট সংযোগ, স্মার্ট ডিভাইস বৃদ্ধি, মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, স্মার্ট প্রোগ্রেস মনিটরিং এবং আরঅ্যান্ডডি’র প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ডিজিটাল ডিভাইড দূর করতে ডিজিটাল প্রযুক্তি সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ক্ষমতায়নে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধির বিকল্প নেই।’
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উদযাপন করতে ডাক অধিদফতর ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম, ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড এবং বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত হয়ে স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন।