ফাইভজি চালুর মাধ্যমে ভারতের প্রযুক্তি খাতে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে টেলিকম খাতে ব্যবহারকারী বৃদ্ধির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (টিআরএআই)। চলতি বছর শেষে ৩ কোটি ১০ লাখ ব্যবহারকারী ফাইভজি স্মার্টফোনে স্থানান্তর হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এরিকসন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে স্মার্টফোন পরিবর্তনের এ তথ্য উঠে আসে। ফাইভজি প্রযুক্তি চালুর পর ব্যবহারকারীরা দ্রুত এটিতে স্থানান্তর হচ্ছে। আর পুরো সুবিধা পেতে প্রয়োজন উন্নত স্মার্টফোন। এরিকসনের ধারণা, বর্তমানে ভারতে ফাইভজি সেলফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি ১০ লাখ থেকে ১০ কোটির মধ্যে রয়েছে।
২০২২ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফাইভজি পরিষেবা চালু করেন। গত মাসে রিলায়েন্স জিও ও ভারতী এয়ারটেলের মতো কোম্পানি বিস্তৃত পরিসরে নেটওয়ার্ক পরিষেবা চালু করে।
সুইডিশ টেলিকম কোম্পানি এরিকসনের কনজিউমার ল্যাব গ্লোবাল সার্ভে নতুন তথ্য দিয়েছে। ফাইভজি পরিষেবা চালুর পর ভারতে ভালো রেজল্যুশনের ভিডিও স্ট্রিমিং, ভিডিও কলিং, মোবাইল গেমিং ও অগমেন্টেড রিয়ালিটির ব্যবহার বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশে ফাইভজি প্রযুক্তি আগে থেকেই প্রচলিত। কিন্তু এসব দেশের তুলনায় ভারতের ব্যবহারকারীরা ফাইভজি পরিষেবায় ২ ঘণ্টা বেশি সময় ব্যয় করছে।
এরিকসন কনজিউমার ল্যাবের প্রধান জাসমিত সিং শেঠি বলেন, ‘আমাদের ধারণা চলতি বছরের বাকি সময়ের মধ্যে ভারতের ৩ কোটি ১০ লাখ ব্যবহারকারী ফাইভজি সেলফোনে স্থানান্তরিত হবে।’
আরেকটি বিষয় হচ্ছে প্রথমে যারা ফাইভজি ব্যবহার শুরু করে, তাদের তুলনায় ভারতের ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্টির মাত্রা বেশি। এরিকসনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতীয় ব্যবহারকারীদের ১৫ শতাংশ তাদের ফাইভজি পরিকল্পনায় অ্যাপ্লিকেশন বান্ডেল, ভিডিও, গেমিং ও মিউজিক যুক্ত করতে আগ্রহী। এমনকি তা উচ্চমূল্যে হলেও।
গ্রাহক পর্যায়ে বড় ইন্টারনেট প্যাকেজের চাহিদা এখনো শীর্ষে। বিশেষ করে মাসের শেষ দিকে ফাইভজি ব্যবহারকারীরা সেলফোনে তেমন কোনো ডাটা প্যাকেজ ব্যবহার করে না। অন্যদিকে, ৫৮ শতাংশের বেশি ব্যবহারকারীকে মাস শেষে ৩০ জিবি ডাটা অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখতে হয়।
বেশি দামে ডাটা প্যাকেজ দেয়ার পরিবর্তে গ্রাহকদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিতে টেলিকম অপারেটরদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যেহেতু ভারতে ফাইভজির পরিধি বাড়ছে, তাই পরিষেবা কোম্পানিগুলোয় আরো নতুনত্ব আনতে হবে। সম্প্রতি ওকলা জানায়, ফাইভজি পরিষেবা চালুর পর ভারতে সেলফোন ডাউনলোড গতি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর মাধ্যমে স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সে দেশটি ৭২ ধাপ এগিয়ে ৪৭-এ এসেছে। জাপান, যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিল এখনো পিছিয়ে।
বৈশ্বিক পর্যায়ে ভারত শুধু যে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে তা নয়। মেক্সিকো (৯০), তুরস্ক (৬৮), যুক্তরাজ্য (৬২), জাপান (৫৮), ব্রাজিল (৫০) ও দক্ষিণ কোরিয়ার (৪৮) মতো জি২০ভুক্ত দেশের ওপরে উঠে এসেছে।