কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই রাতে একযোগে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) নির্দেশনায় ইন্টারনেট শাটডাউন করা হয়। এ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক।
বুধবার (২১ আগস্ট) তিনি গণমাধ্যমে বিষয়টি খোলসা করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে এমদাদুল হক বলেন, গত ১৮ জুলাই আমাদের অবহিত না করেই আপস্ট্রিম ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে হঠাৎ করেই ইন্টারনেট সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ইন্টারনেট বন্ধের সঠিক কারণ সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী আমরা জানতে পারি যে, তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও এনটিএমসির নির্দেশে ইন্টারন্যাশনাল টেলিস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি) এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) থেকে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আইটিসি ও বিএসসিসিএল হচ্ছে আইএসপি লেয়ারের ও এক ধাপ ওপরের লেয়ার (স্তর)। অর্থাৎ আইআইজি’র ওপরের লেয়ার (স্তর)। সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যম ইন্টারনেট কেন বন্ধ হয়েছে, এ বিষয়ে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল। যেহেতু আমরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের নেতৃত্ব দেয়, তাই আমাদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমি সেদিন গণমাধ্যমে বলেছিলাম যে আমাদের ব্যান্ডউথ সাপ্লাই দিচ্ছে না আইআইজি, যে কারণে আমরা ইন্টারনেট সরবরাহ করতে পারছি না।
এমদাদুল হক বলেন, আমার বক্তব্য হয়তো কোনোভাবে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কোথাও কোথাও। এজন্য সত্যিই আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত এবং এ ধরনের কার্যক্রম অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রকৃত কারণ এরই মধ্যে সবার কাছে উন্মোচিত হয়েছে।
ইন্টারনেট বন্ধের ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইএসপিএবি সভাপতি বলেন, ইন্টারনেট সেবা শাটডাউনের কারণে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির যে ক্রয় ক্ষতি হয়েছে, আমি একজন ব্যবসায়ী ও ইন্টারনেটের সাধারণ গ্রাহক হিসেবে ক্ষতিপূরণ চাই।
কোনো সরকার যেন আর এভাবে ইন্টারনেট শাটডাউন না করেন, সেই দাবি জানিয়ে এমদাদুল হক বলেন, ইন্টারনেট সেবা বন্ধের কারণে দেশের সব সেক্টরে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বর্তমান ও পরবর্তী সব সরকারে কাছেই আবেদন কোনো অবস্থাতেই যেন ইন্টারনেট আর বন্ধ করা না হয়। বাকস্বাধীনতার অপর নাম হচ্ছে ইন্টারনেট। তাই কোনোভাবেই আমাদের বাকস্বাধীনতা বন্ধ হোক, এটা আমরা চাই না।