‘৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট’—এই ঘোষণা সম্প্রতি দিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। সংগঠনটি জানিয়েছে, ইন্টারনেটের গতি বাড়িয়ে খরচ একই রাখা হবে। তবে গ্রাহকদের একাংশ বলছেন, এ অফারের বাস্তবতা প্রত্যাশার সঙ্গে মিলছে না।
রাজধানীর কয়েকটি এলাকার গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১০ এমবিপিএস সংযোগ নেওয়ার পরও ব্যবহারকারীরা প্রকৃত গতি পাচ্ছেন না। খিলক্ষেতের রিয়াজ মোর্শেদ বলেন, ‘ইউটিউবেও ভিডিও ঠিকমতো চলে না, স্পিড টেস্টে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ এমবিপিএস গতি পাওয়া যায়।’
মিরপুরের গৃহিণী শবনম সুলতানার অভিজ্ঞতা, ‘আগেও ১০ এমবিপিএস ব্যবহার করতাম, এখন শুধু অফার পাল্টেছে। তবে বাস্তবে পার্থক্য চোখে পড়েনি। মাসে কয়েকবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে।’
আইএসপিএবির এই ঘোষণাকে অনেকেই দেখছেন একটি বিপণন কৌশল হিসেবে। ইন্টারনেট গতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন ব্যবহারকারীরা। তারা বলছেন, সংযোগ নেওয়ার সময় যেসব গতি দেখানো হয়, বাস্তবে তা পাওয়া যায় না।
আইএসপি–খাতের একজন উদ্যোক্তা টেকজুমকে বলেন, ‘এটা আসলে শেয়ার্ড ব্যান্ডউইথের বিষয়। বিটিআরসির নীতিমালায় বলা আছে, একটি সংযোগ সর্বোচ্চ আটজনের সঙ্গে ভাগ করা যায়। ফলে একজন ব্যবহারকারী পূর্ণ গতি পান না।’
মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রতিশ্রুত গতি না দেওয়া হলে, এটি গ্রাহক প্রতারণার পর্যায়ে পড়ে। আইএসপিএবি যদি ১০ এমবিপিএস বলে, সাধারণ গ্রাহক ধরে নেয় তিনি সেটিই পাবেন।’
আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ ১:৩ অনুপাতে স্পিড ভাগ করছি, অনেক ক্ষেত্রে ১:২-ও করা হচ্ছে। ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস সংযোগ বাস্তবায়নের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।’
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওকলার তথ্যমতে, ইন্টারনেট গতির দিক থেকে ১৫৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গুণগত মান সবচেয়ে নিকৃষ্ট। দামও তুলনামূলক বেশি। কোয়ালিটি বাড়ানো না গেলে দাম কমানোর যুক্তি আসে না।’