স্যামসাং পারিবারিক গাড়ি থেকে শুরু করে রোবট পর্যন্ত প্রায় সবকিছুই বানিয়েছে। তবে আমরা স্যামসাং সম্পর্কে আসলে কতটা জানি? এবার আপনাদের সাথে এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলব যা হয়ত আপনি জানতেন না। তবে চলুন শুরু করা যাক।
কোরিয়ায় স্যামসাং এর এক বিশাল ভবন আছে যাকে বলা হয় স্যামসাং ডিজিটাল সিটি। এখানেই সকল গ্যালাক্সি ফোনগুলো তৈরি করা হয়। আর এখানেই সবার আগে গ্যালাক্সি কার্ভ টিভি ব্যবহার করা হয়েছিল। এখানে একটি বিশেষ কক্ষ আছে যেখানে একেবারে পিনপতন নিরবতা থাকে। আর এখনেই স্যামসাং এর অডিও কোয়ালিটির পরিক্ষা চালানো হয়। তাদের এখানে একটি সাউন্ড ল্যাব আছে যেখানে আছে সকল প্রকার বাদ্যযন্ত্র। আর এখানেই স্যামসাং এর সকল রিংটোন ও অ্যালার্ট সাউন্ড এখানেই তৈরি করা হয়।
স্যামসাং এর একটি বিশেষ ফিলোসফি আছে যেটা হলো ওয়ার্ক স্মার্ট। মানে স্যামসাং এর কর্মীরা নিজেদের মত কাজের সময় বন্টন করে কাজ করতে পারে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এটা তাদের আরও প্রোডাক্টিভ হতে সাহায্য করে। আর যেহেতু কর্মীর কথা চলেই এসেছে, স্যামসাং এ প্রায় সাড়ে ৩ লাখের মত কর্মী কাজ করে। আর একটু তুলনা করতে গেলে দেখা যাবে যে, এই সংখ্যা অ্যাপল, গুগল ও নোকিয়ার মোট কর্মীর সংখ্যার সমষ্টির সমান। এবং তাদের নিয়ন্ত্রন করতে ৩টা সিইও এর দরকার হয়। কোরিয়ার প্রায় ১৭% জিডিপি এনে থাকে স্যামসাং এর রেভিনিউ।
স্যামসাং শুধু তাদের নিজেদের দেশেই ২ বিলিয়নেরও বেশি গ্যালাক্সি ফোন বিক্রি করেছে। হ্যাঁ, শুধুমাত্র গ্যালাক্সি ফোন। স্যামসাং এর বেশ কিছু ব্রাঞ্চ আছে। যেগুলোর মধ্যে স্যামসাং টেকউইন বিশ্বের সবথেকে বড় জাহাজ নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এক। তাছাড়া এরা কোরিয়ার সৈনিকদের জন্য এমন এমন যুদ্ধাস্র তৈরি করেছে যা আপনি ভাবতেও পারবেন না। তারা এমন এক ট্যাঙ্ক তৈরি করেছে তাদের দেশের সৈনিকদের জন্য যা ৪০ কিলোমিটার দুরেও নিশানা ছুড়তে পারে। স্যামসাং মটর নামেও এক শাখা আছে যেটা শুধু গাড়ি তৈরির দিকে নজর দেয়। আবার স্যামসাং বিশ্বের সবথেকে বড় ভবন, বুর্জ খলিফা তৈরি করেছিল।
স্যামসাং এর বিরুদ্ধে অ্যাপল আইনি ভাবে টানা ৭ বছর আইনি যুদ্ধ চালিয়েছে যদিও শেষে আদালত স্যামসাং এর পক্ষে রায় দেয়। আর আপনারা এটা যেনেও অবাক হবেন যে স্যামসাং, অ্যাপলের ৯০% ওলেড প্যানেল সর্বরাহ করে। তাই অ্যাপল ও স্যামসাং কেউ কাউকেই হারিয়ে ফেলতে চায় না। স্যামসাং প্রথমে শুধু নুডুলস ও শুটকি মাছ বিক্রি করত। আর সেখানে থেকে এটা এখন একটা টেক জায়ান্ট। তবে এমনটা কিভাবে হলো তা নিয়ে অন্য এক লেখায় আলোচনা করব।
আর আপনি যদি ম্যাট্রিক্স রিলোডেড মুভি দেখে থাকেন তাহলে খেয়াল করবেন তাদের ফোনের ব্র্যান্ড কী ছিল। হ্যাঁ, এই মুভির ফোনগুলো স্যামসাং বানিয়েছিল। আর আপনি হয়ত এটাও জেনে অবাক হবেন যে স্যামসাং এর এক ফোল্ডিং ফোন আছে যেটা পুরোটাই অ্যান্ড্রইডে চলে। আর এই ফোন কেনা বেশ অদ্ভুত এক পছন্দ হতে পারে।
শুধু এগুলোই নয়। স্যামসাং এর এরকম আরও অনেক অজানা বিষয় আছে। তবে সেগুলো থাক। এবার মতো এই লেখাটা শেষ করছি। সামনের কোন এক লেখায় আরও কিছু নিয়ে আলোচনা করব। ততক্ষণ পর্যন্ত স্বুস্থ থাকুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।