জনপ্রিয় আইফোন ডিভাইসে নতুন একটি ত্রুটি দেখা দিয়েছে। অসংখ্য ব্যবহারকারী আইফোন ব্যবহার নিয়ে সমস্যায় পড়ার অভিযোগ করেছেন। আইফোনের ডিসপ্লে সংশ্লিষ্ট বিশেষ এক সমস্যা নিয়ে রেডিট, টেক ফোরাম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাকরিউমারের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
আইফোন ব্যবহারকারী অনেকেরই অভিযোগ, সম্প্রতি আইওএস হালনাগাদ করার পর পরই তাদের ডিভাইসের ডিসপ্লেতে সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সেখানে সবুজ রঙের আভা ছড়িয়ে পড়ছে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে হার্ডওয়্যারে সমস্যা থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ ডিসপ্লে পরিবর্তন করা ছাড়া ডিসপ্লেজুড়ে সবুজ রঙের আভার সমস্যাটি যাবে না বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যবহারকারীদের অনেকে আইফোন নিয়ে কম আলোতে গেলেই ডিসপ্লের ওই সবুজ আভা ফুটে ওঠে। কারো ক্ষেত্রে ফোন আনলক করার সময় তা দেখা যায়, আবার কারো কারো স্থায়ীভাবে ফোনের ডিসপ্লে সবুজাভ হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে আইফোন ১১ প্রো ও প্রো ম্যাক্সের ক্ষেত্রে। আইফোন এক্স নিয়ে অনেকেই সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
আইওএস ১৩.৪ থেকে সাম্প্রতিক সফটওয়্যার হালনাগাদে এ সমস্যার বিষয় দেখতে পাচ্ছেন কেউ কেউ। তবে অনেকেই নতুন ফোন কেনার পর থেকেই সমস্যাটি পাচ্ছেন। এ সমস্যা কীভাবে ঠিক করা যাবে, তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সফটওয়্যারে সমস্যা হলে অ্যাপল দ্রুত তা হালনাগাদ এনে ঠিক করে দিতে পারে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে হার্ডওয়্যারে সমস্যা থাকায় তা সফটওয়্যার হালনাগাদে সমাধান হবে না। অ্যাপল সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে এবং অনুমোদিত বিক্রেতার মাধ্যমে ওয়ারেন্টির আওতায় তা ঠিক করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ফোর্বস ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাস্তবতা হচ্ছে, ওএলইডি ডিসপ্লের একটি বাজে ব্যাচজুড়ে সমস্যাটি থাকতে পারে। কেউ কেউ অবশ্য অ্যাপলের নতুন আইওএস ১৩.৫.৫ বেটা সংস্করণে সমস্যার কথা বলছেন। এখন এটি সফটওয়্যার, নাকি হার্ডওয়্যার পরিবর্তনের মাধ্যমে ঠিক করা হবে, অ্যাপল তা জানায়নি।
বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, আইফোন ব্যবসা নিয়ে স্মরণকালের খারাপ সময় পার করছে অ্যাপল। গত ডিসেম্বরে চীনে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দেশটিতে সব খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবে আইফোন উৎপাদন এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বিভ্রাট সৃষ্টি হয়, যা আইফোনের বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চীনে পরিস্থিতি ঠিক হলেও নভেল করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে। কর্মীদের স্বাস্থ্যনিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় বাজারেও সব বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করতে বাধ্য হয় অ্যাপল। দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রে সব আউটলেট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করা হলেও কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ঘিরে চলমান বিক্ষোভের কারণে আবার বন্ধ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সামগ্রিক দিক বিবেচনায় আইফোন ব্যবসায় দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।