প্রতি সেকেন্ডে তিন জনের বেশী গ্রাহক আর্থিক অ্যাকাউন্ট খুলে ডিজিটাল লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। আর্থিক অন্তর্ভূক্তির চমক জাগানো এই অর্জন সম্ভব হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর উদ্ভাবনের কারণে।
গত ৭ মার্চ সব মিলে দুই লাখ ৮৭ হাজার নতুন গ্রাহক ‘নগদ’-এর অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। যার মধ্যে ৯৫ শতাংশ গ্রাহকই অ্যাকাউন্ট খুলেছেন *১৬৭# ডায়াল করে। বাকি গ্রাহক ‘নগদ’ অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এর আগে ৬ মার্চ এই একই প্রক্রিয়ায় দুই লাখ ৫১ হাজার গ্রাহক ‘নগদ’-এ অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে এই ধারা অব্যহত রয়েছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহনের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াকে ‘নগদ’ এতোটাই সহজ ও সার্বজনীন করেছে যে, চাইলেই যে কোনো মোবাইল গ্র্রাহক যে কোনো সময় *১৬৭# ডায়াল করে পিন সেট করে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন। অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া ঝামেলাহীন হওয়ার কারণেই আর্থিক অন্তর্ভূক্তি হয়েছে বৈষম্যহীন ও সার্বজনীন।
যে কোনো প্রক্রিয়ায় এক সঙ্গে এতো বেশী সংখ্যক গ্রাহকের আর্থিকভাবে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে এর আগে ঘটেনি। সরকারের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে সবগুলো মোবাইল ফোন অপারেটরের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে গ্রাহকদের তথ্য যথাযথোভাবে যাচাই করে তবেই অ্যাকাউন্ট খুলছে ‘নগদ’। মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে যেহেতু গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে, সুতরাং *১৬৭# ডায়াল করে গ্রাহক তার আগ্রহের কথা জানানোর মুহুর্তেই জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে থেকে গ্রাহকের তথ্য ভ্যারিফিকেশন করিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে। ‘নগদ’ এর উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাড়া ফেলেছে।
অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ক্যাম্পেইন চালু করার পর ‘নগদ’ প্ল্যাটফর্মে যেন গ্রাহকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। ‘নগদ’ এর অ্যাপ ডাউনলোড বেড়ে যাওয়ায় গুগল প্লে স্টোরে ‘নগদ’ অ্যাপ এখন বাংলাদেশের মধ্যে টপ চার্টে অবস্থান করছে।
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের মাধ্যমে ‘নগদ’-এর অভাবনীয় সাফল্য সম্পর্কে ‘নগদ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, “প্রতি সেকেন্ডে তিন জনের বেশী গ্রাহক ‘নগদ’ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকরা আমাদের প্রতি যে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা দেখিয়েছে তাতে আমরা মুদ্ধ। শুরু থেকেই খুব সহজে সারাদেশের মানুষের কাছে ‘নগদ’-কে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি আমরা। এক্ষেত্রে এক দিকে আমরা যেমন খরচ কমিয়েছি, অন্যদিকে আবার প্রযুক্তির মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ করেছি। আমাদের মূল চাওয়া আর্থিক অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে ‘নগদ’ দেশের মানুষকে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম দেবে, যার মাধ্যমে তারা আর্থিক লেনদেনের স্বাধীনতা পাবে। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের চেষ্টার ফল দেখতে শুরু করেছি। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে আমরা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এমএফএস অপারেটর হিসেবে পরিণত হবো।”
গ্রাহক সংখ্যার বিবেচনায় বর্তমানে ‘নগদ’ এর মার্কেট শেয়ার ৩০ শতাংশ, যা চলতি বছরের মধ্যেই ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে অপারেটরটি।
একসময় যেকোনো মোবাইল অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য মানুষকে ব্যাপক পরিশ্রম ও অর্থ খরচ করতে হতো। সেই সঙ্গে কয়েক দিন, এমনকি সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতো হতো। এই অচলায়তন ভাঙতে ডাক বিভাগের ‘নগদ’ দেশে প্রথম ডিজিটাল কেওয়াইসি চালু করে। এরপর সরকারের পরিচয় অ্যাপের মাধ্যমে এক মিনিটে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালু করে। সর্বশেষ *১৬৭# ডায়াল করে পিন সেট করলেই একজন মুহূর্তেই ‘নগদ’-এর গ্রাহক হতে পারছেন। আর্থিকখাতে এমন উদ্ভাবনের কারণে এরই মধ্যে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে পুরস্কৃত হয়েছে ‘নগদ’।
প্রযুক্তিগত সুবিধার পাশাপাশি ‘নগদ’-এ এখন চলছে দারুণ মোবাইল রিচার্জ অফার। ‘নগদ’ ওয়ালেট থেকে যেকোনো মোবাইল অপারেটরে ২০ টাকা রিচার্জ করলেই পাচ্ছেন ২০ টাকা বোনাস। এ ছাড়াও দেশের সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ, সেন্ড মানি ফ্রি, বিল পে ফ্রি এবং জমানো টাকার ওপর সবচেয়ে বেশি মুনাফা ও ঝামেলাহীন পেমেন্ট অফারসহ আরও অনেক কিছু পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে সরকারি এই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অপারেটরটি।