ফ্রি ফায়ার ও পাবজির মতো জনপ্রিয় দুই গেম বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশে। এর আগে পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলেও পরে আবার চালু করা হয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সুপারিশ করা হয়েছে । বিষয়টি নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও আলোচনা হয়। সেখানে ওই দুই গেমের আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম দুটি বন্ধে দুই মন্ত্রণালয় থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি সত্য যে ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে বন্ধ করতে গেলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে। তাই ধীরে সুস্থে বিকল্প পদ্ধতিতে গেম দুটি বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে।
বন্ধ করলেও তরুণরা ভিপিএন দিয়ে গেমটি খেলবে এমন প্রশ্নে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হ্যা, যারা এ ধরনের গেমে আসক্ত তারা ভিপিএনসহ নানা বিকল্প উপায়ে গেমটি খেলতে পারে। আমরা সেসবও বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করব।
করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সম্প্রতি গেম দুটিতে মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের।
সম্প্রতি ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
হঠাৎ করে বন্ধ করতে গেলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে। তাই ধীরে সুস্থে বিকল্প পদ্ধতিতে গেম দুটি বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে। যারা এ ধরনের গেমে আসক্ত তারা ভিপিএনসহ নানা বিকল্প উপায়ে গেমটি খেলতে পারবেন। আমরা সেসবও বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করবো। গেরিনা ফ্রি ফায়ার (ফ্রি ফায়ার ব্যাটলগ্রাউন্ডস বা ফ্রি ফায়ার নামেও পরিচিত) একটি ব্যাটল রয়্যাল গেম।
২০১৯ সালে এটি বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ডাউনলোড করা মোবাইল গেম হয়ে উঠেছে। জনপ্রিয়তার কারণে, গেমটি ২০১৯ সালে গুগল প্লে স্টোর দ্বারা ‘সেরা জনপ্রিয় ভোট গেম’ এর জন্য পুরস্কার পেয়েছিল। ২০২০ সালের মে পর্যন্ত ফ্রি ফায়ার বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮০ মিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারীদের সঙ্গে একটি রেকর্ড তৈরি করে।
গেরিনা বর্তমানে ফ্রি ফায়ারের উন্নত সংস্করণে কাজ করছেন যা ফ্রি ফায়ার ম্যাক্স নামে পরিচিত। গেমটি অন্য খেলোয়াড়কে হত্যা করার জন্য অস্ত্র এবং সরঞ্জামের সন্ধানে একটি দ্বীপে প্যারাসুট থেকে পড়ে আসা ৫০ জন ও তার অধিক খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করে।
অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে বন্দুক দিয়ে মসজিদে মুসলমানদের হত্যা এবং সেই দৃশ্য ফেসবুক লাইভের বিষয়টি অনেকেই পাবজির সঙ্গে তুলনা করেন। সম্প্রতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। অনলাইন গেম ‘প্লেয়ার আননোনস ব্যাটলগ্রাউন্ডস’ (পাবজি)। সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব ও শিক্ষার্থী- কিশোর-কিশোরীদের সহিংস করে তুলছে এমন আশঙ্কা থেকেই গেমটি বন্ধ করা উচিত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। পাবজি গেমটির মোবাইল ভার্সনে একসঙ্গে অনেকজন মিলে অবতরণ হন এক যুদ্ধক্ষেত্রে। যতক্ষণ না পর্যন্ত একজন সিঙ্গেল সেনা বেঁচে থাকছেন যুদ্ধে ততক্ষণ খেলে যেতে হয়। ২০১৮ সালে অ্যাঙ্গরি বার্ড, টেম্পল রান, ক্যান্ডি ক্রাশের মতো গেমগুলোকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন গেমের তালিকায় শীর্ষে জায়গা করে নেয় পাবজি।
ছাড়াও আরো কিছু কারণ দেখানো হয়েছে গেম দুটি বন্ধের বিষয়ে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ ধরনের গেম খেলার ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। অনলাইনে গেম খেলার পাশাপাশি ভার্চ্যুয়ালে অর্থ লেনদেন হচ্ছে এমএমএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র, সমাজ, ব্যক্তি ও পরিবার।
সম্প্রতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল, পরে আবার চালু করা হয়।
প্রসঙ্গত, চীনা প্রতিষ্ঠানের ২০১৯ সালে তৈরি করা যুদ্ধ গেম ফ্রি ফায়ার ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গেম ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ব্লু হোয়েলের অনলাইন ভিডিও গেমটির মতোই। ২০১৯ সালে এটি বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ডাউনলোড করা মোবাইল গেম ।
গেমটি অন্য খেলোয়াড়কে হত্যা করার জন্য অস্ত্র এবং সরঞ্জামের সন্ধানে একটি দ্বীপে প্যারাসুট থেকে পড়ে আসা ৫০ জন ও তার অধিক খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করে।
বর্তমানে ফ্রি ফায়ারের উন্নত সংস্করণে কাজ চলছে যা ফ্রি ফায়ার ম্যাক্স নামে পরিচিত।
অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে বন্দুক দিয়ে মসজিদে মুসলমানদের হত্যা এবং সেই দৃশ্য ফেসবুক লাইভের বিষয়টি অনেকেই পাবজির সঙ্গে তুলনা করেন।
এসব গেম কোমলমতিদের ওপর মনস্তাত্বিক প্রভাব ফেলছে এবং তরুণদের আগ্রাসী করে তুলছে বলে মত দিয়েছেন মন বিজ্ঞানীরা।