গেম, পর্ণোগ্রাফির ওয়েবসাইট বন্ধ করা কোনো সমাধান নয়। ভালো মানের শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরিই পারে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে। ইন্টারনেট থাকায় করোনা মহামারির সময়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থনীতি প্রভৃতি গতিশীল ছিলো। এ অবস্থায় ইন্টারনেট ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
শনিবার (৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে ‘নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
এসময় বক্তারা বলেন, গেম, পর্ণোগ্রাফি প্রভৃতি ধরণের ওয়েবসাইট দফায় দফায় বন্ধ করা কোনো সমাধান নয়। কারণ এসব ওয়েবসাইট বন্ধ করার পরও ভিপিএন এর মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষার হার বেশি হলেও জনসংখ্যার তুলনায় ডিজিটাল লিটারেসিতে দক্ষতা কম। কারিগরি দিক দিয়েও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ব্লক বা নিষিদ্ধের পথে না গিয়ে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের সমাধানের একমাত্র পথ জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
বক্তারা বলেন, সন্তানরা মা-বাবাকে অনুসরণ করে। সন্তানদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিভাবকের ভূমিকা বেশি। শিশুদের কাছে নিষিদ্ধ জিনেসের প্রতি আকর্ষণ বেশি। তাই শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে মুঠোফোন তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। শিশুর প্রতি যত্ন নিতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ক পাঠ অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানান বক্তারা। বিদেশে বসে অনেকে সেনাবাহিনী, প্রশাসন, প্রধানমন্ত্রী নিয়ে মিথ্যাচার করছে এসব বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান তারা।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসি ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রয় মিত্র। এসময় তিনি বলেন, হাইকোর্ট থেকে গেম বন্ধের আদেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব গেম তো ভিপিএন ব্যবহার করে এখনো চলছে।
পর্নোগ্রাফি, গেম এসব আইন করে, পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে এসব বন্ধ করা যাবে না। অনেকে ফেসবুক, ট্যুইটারে ভুয়া আইডি খুলে হয়রানি করে। ফেসবুক, ট্যুইটার, ইউটিউবের এসব লিঙ্ক বন্ধ করার পেছনে বিটিআরসির বেশিরভাগ সময় চলে যায়। সাইবার সিকিউরিটিতে আমাদের দ্রুত স্ট্রাটেজি ঠিক করা দরকার।
আলোচনা সভার শুরুতে সাইবার অ্যাটাকের ধরণ, কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্তরে হার, সিকিউরিটি প্রাইভেসি, বিনামূল্যের ওয়াই-ফাই ব্যবহারের ত্রুটি, ইন্টারনেট ব্যবহারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরে নিরাপত্তা ও অভিভাবকদের করণীয় বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের হেড অব টেকনিক্যাল কমিটি ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু সালেহ।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আইএসপিএসি মহাসচিব এমদাদুল হক, রবি অজিয়াটা লিমিটেড চীফ রেগুলাটরি অ্যাফেয়ার্স ব্যারিস্টার সাহেদ আলম, বাংলালিংকের চীফ রেগুলাটরি অ্যাফেয়ার্স তৈমুর রহমান, রাষ্ট্রচিন্তাবিদ মেজর (অব) ইকবাল মাহমুদ চেীধুরী, টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন আনু।