তাজিংডং বান্দরবানের একটি পর্বতশৃঙ্গ।অনেকের কাছে আবার বিজয় নামে পরিচিত।স্থানীয় উপজাতীয়দের ভাষায় ‘তাজিং’ শব্দের অর্থ বড় এবং ‘ডং’ শব্দের অর্থ বিশাল পাহাড়। এই দুটি শব্দ থেকে তাজিংডং পর্বতের নামকরণ।
সরকারিভাবে তাজিংডং বিজয় পর্বত। তাজিংডং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রী পাংশা ইউনিয়নে সাইচল পর্বতসারিতে অবস্থিত। এটি রুমা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে।
সরকারিভাবে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে স্বীকৃত। সরকারি হিসেবে তাজিংডং পর্বতের উচ্চতা ১,২৮০ মিটার বা ৪১৯৮.৪ ফুট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪,৩০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত।
এখানে তাজিংডং ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনন্য সহজ-সরল জীবন যাপন। যাদের সংস্কৃতি এবং জীবন বৈচিত্র্য প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত। একসময় তাজিংডং এ পৌঁছানো দুরুহ হলেও বর্তমানে প্রচুর পর্যটক প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এখানে এসে থাকেন। শুধু তাজিংডং এ নয় প্রকৃতির সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে এর আশেপাশেও।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ বেয়ে ওপরের দিকে যতই উঠা যায় ততই মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। কখনো আকাশের দিকে উঠতে থাকে তো আবার কখনো নিচে নামতে থাকে। মাঝেমধ্যে পাহাড়ের বাঁকে খুব সামনের পথও দেখা যায় না। মনে হয়, এই বুঝি পাহাড়ের খাদে পড়ে যাচ্ছি।
এই জার্নিটা ঠিক রোলার কোস্টার রাইডের মতো অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর। সারা জীবন আপনাকে মনে রাখতে বাধ্য করবে। পাহাড় কেটে বানানো রাস্তা নিচের দিকে তাকালে গা ছমছম করে, এতটা নিচে যে আর দেখা যায় না মেঘের কারণে। পাহাড় আর পাহাড়।
পাহাড়গুলো মেঘের চাদরে ডাকা, মেঘ পাহাড়ের সেকি অলিঙ্গন। আল্লাহ তাআলার কি অপরূপ সৃষ্টি৷স্রষ্টার সৃষ্টি নৈপূন্য আপনাকে ভাবিয়ে তুলবে বারবার।কি অপূর্ব সৃষ্টি, কি সুনিপন।না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।নিজ চোখে অবলম্বন করলে বোঝা স্রষ্টার কুদরত। চিম্বুক পাহাড়ের সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের পাশে আছে যাত্রাবিরতি৷এখানে ফ্রেশ হয়ে হালকা নাশতাও সেরে নেয়া যায়।
বর্ষাকালে এখানকার সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করা যায় না। তবে, শীতকালে অনেক পর্যটক এখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পায়ে হেঁটে এসে থাকেন। বর্তমানে চান্দের গাড়িতে করে তাজিংডং এর কাছাকাছি পৌছা যায়।
তবে, বাকি পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে হবে। শীতকালে এখানে আসলে গরম কাপড় সাথে রাখতে হবে। তাজিংডং এ পৌঁছানোর পথে হাঁটার অনন্য অভিজ্ঞতার রেশ সারাজীবন মনে বেয়ে বেড়ায়।
এবার আর দেরি নয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য আপনি ও রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ুন।একটু বিশুদ্ধ হাওয়ায় মন প্রাণ পরিশোধন করে নিন।মাঝে মাঝে আপন গন্ডি থেকে বেরিয়ে একটু প্রকৃতির সংস্পর্শে যেতে হয় যাতে মন সতেজ হয়ে উঠে।
রাহাত সোলতানা
স্বত্বাধিকারী-অভিরুচি বুটিকস