ক্রমেই স্মার্টফোন শক্তিশালী হচ্ছে। এতে যুক্ত হচ্ছে উন্নত ক্যামেরাসহ শক্তিশালী প্রসেসর, র্যাম। এরমধ্যে দুর্দান্ত ক্যামেরার একটি স্মার্টফোন কমবেশি সবার চাহিদাতেই থাকে। খুব বেশি অর্থ খরচ না করেও ভালোমানের ক্যামেরার স্মার্টফোন কেনা সম্ভব। এমনই সেরা ১০ ক্যামেরার স্মার্টফোন নিয়ে আমাদের আজকের লেখা। এ জন্য খরচ করতে হবে ৫০ হাজারের কাছাকাছি।
১) রেডডি নোট ১১ প্রো প্লাস: শাওমির এই ফোনটি সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের ডিভাইসের মধ্যে একটি। এতে রয়েছে ১২০ ওয়াটের ফাস্ট চার্জারসহ ৪৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি। মিডিয়াটেক ৯২০ প্রসেসরের ফোনের রয়েছে এফএইচডি অ্যামোলেড ডিসপ্লে।
ট্রিপল ক্যামেরার ফোনে থাকছে ১০৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা, একটি ৮ মেগাপিক্সেল ওয়াইড-এঙ্গেল এবং একটি ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো লেন্স। সেলফি রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ভালোমানের ছবি তুলতে আছে নাইট মোডসহ আরও কিছু ফটো মোড। ফোনের বর্তমান বাজার মূল্য ৪২৯ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৩ হাজার টাকা।
২) গুগল পিক্সেল ৬: গুগলের এই ফোনে রয়েছে ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ। ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা সেন্সর ও একটি ১২ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড শুটার। সেলফিপ্রেমীদের জন্য থাকছে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। গুগলের নিজস্ব টেনসর প্রসেসরের এই ফোনে আছে ৮ জিবি র্যাম ও ২৬৫ জিবি স্টোরেজ।
ন্যানো ও ই-সিম সমর্থিত ডুয়াল সিমের এই ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে ৬.৪ ইঞ্চি ফুল এইচডি প্লাস ডিসপ্লে। ফোনের বর্তমান বাজার মূল্য ৪৮০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৮ হাজার টাকা।
৩) স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৫৩: ফাইভজি সমর্থিত স্যামসাংয়ের এই ফোনের থাকছে ৬.৫ ইঞ্চি ফুল-এইচডি সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে। অক্টাকোর প্রসেসর এবং ৮ জিবি র্যামের এই ফোনে রয়েছে ২৫৬ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ। মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে স্টোরেজ ১ টিবি পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া যাবে।
ফটোগ্রাফির জন্য ফোনের ব্যাক প্যানেলে আছে ৬৪ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা। ১২ মেগাপিক্সে আল্ট্রা ওয়াইড- অ্যাঙ্গেল লেন্স, ৫ মেগাপিক্সেল ডেপ্থ সেন্সর এবং ৫ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো লেন্স। এছাড়া সেলফি জন্য রয়েছে ৩২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ফোনের বাজার মূল্য ৪৪৯ ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৭ হাজার টাকা।
৪) ওয়ানপ্লাস ৯: ২০২১ সালে বাজারে আসা ফোনটি এরইমধ্যে সেরা ক্যামেরা ফোনের তকমা পেয়েছে। ফোনে রয়েছে কোয়াড রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ। সনির আইএমএক্স৭৮৯ সেন্সরের ৪৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা, একটি ৫০ মেগাপিক্সেল সনির আইএমএক্স৭৬৬ আল্ট্রা-ওয়াইড ফ্রিফর্ম লেন্স, একটি ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফোটো ক্যামেরা এবং একটি 2 মেগাপিক্সেল মনোক্রোম ক্যামেরা সেন্সর। সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য ফোনে রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ৮কে ভিডিও ধারণ করা যায়।
স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ ফাইভজি প্রসেসরের এই ফোনে রয়েছে ১২ জিবি র্যাম ও ২৬৫ জিবি রম। ফোনের বর্তমান বাজার মূল্য ৪১৪ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪২ হাজার টাকা।
৫) শাওমি ১২: ৬.২৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ১ প্রসেসর এবং ৫ হাজার এমএএইচ ব্যাটারির এই ফোনের ক্যামেরা সবার থেকে আলাদা। ফোনটিতে রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা, যা প্রো-গ্রেড। নতুন ফোকাস প্রযুক্তি, এআই এবং ইমেজ প্রসেসিং অ্যালগরিদমসহ কম আলোতেও ভালোমানের ছবি তোলা সম্ভব।
ফোনে আরও রয়েছে ১৩ মেগাপিক্সেল ওয়াইড-এঙ্গেল এবং ৫ মেগাপিক্সেল টেলিফটো ম্যাক্রো ক্যামেরা। সেলফির জন্য রয়েছে ২০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ফোনের বাজার মূল্য ৪৭০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৮ হাজার টাকা।
৬) গুগল পিক্সেল ৬এ: গুগরের পিক্সেল সিরিজের এই ফোনে রয়েছে ৬.১ ইঞ্চি ফুল এইচডি প্লাস ওএলইডি পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে, রিফ্রেশ রেট ৬০ হার্টজ। ফোনের ডিসপ্লে সুরক্ষায় রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৩। পারফরম্যান্সের জন্য রয়েছে অক্টা-কোর গুগল টেনসর প্রসেসর।
ফোনটিতে ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে। ১২.২ মেগাপিক্সেল সনির আইএমএক্স৩৬৩ প্রাইমারি ক্যামেরা, এফ/২.২ অ্যাপারচারসহ ১২ মেগাপিক্সেল আলট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স। সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। ফোনের বাজার মূল্য ৪৪৯ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬ হাজার টাকা।
৭) অপো ফাইন্ড এক্স ৩ নিও: ফোনটি দেখতে অনেকটাই ফ্যাবলেটের মতো। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫ চিপসেট এই ফোনে রয়েছে ১২ জিবি র্যাম এবং ২৫৬ জিবি রম। কোয়াড রিয়ার ক্যামেরা সেটআপের এই ফোনে রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা, ১৬ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড, ১৩ মেগাপিক্সেল টেলিফটো এবং ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো সেন্সর। সেলফির জন্য রয়েছে ৩২ মেগাপিক্সেল ওয়াইড ক্যামেরা।
সবগুলো ক্যামেরাতে ৪কে ভিডিও রেকর্ডের সুবিধা রয়েছে। ফোনের বাজার মূল্য ৪৮০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৯ হাজার টাকা।
৮) অনর ৫০: এইচডিআর, প্যানোরামা সুবিধাসহ কোয়াড রিয়ার ক্যামেরার এই ফোনে রয়েছে ১০৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা, ৮ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড, ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো ও ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ সেন্সর। সাথে যুক্ত আছে এলইডি ফ্ল্যাশ।
ফোনের প্রধান আকর্ষণ এতে থাকা সেলফি ক্যামেরা। ৩২ ও ১২ মেগাপিক্সেলের দুটি ক্যামেরা রয়েছে এতে। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৭৭৮ ৫ জি অক্টাকোর প্রসেসরের ফোনে রয়েছে ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ। ফোনের বাজার মূল্য ৪৪০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা।
৯) ওয়ানপ্লাস নর্ড ২টি: ৬.৪৩ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লের এই ফোনে রয়েছে মিডিয়াটেক ডিমেনসিটি ১৩০০ প্রসেসর। ডিসপ্লেতে রয়েছে এইচডিআর১০ প্লাস সাপোর্ট এবং কর্নিং গোরিলা গ্লাস ৫। ওয়ানপ্লাসের এই ফোনে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেন্সর রয়েছে। ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর, ৮ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সের সেন্সর এবং ২ মেগাপিক্সেল মাইক্রো সেন্সর। এছাড়া ৩২ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা রয়েছে এতে।
১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের বাজার মূল্য ৩৯৯ ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
১০) আইফোন এসই: আইফোন এসই ডিভাইসে রয়েছে ৪.৭ ইঞ্চি পর্দা, এ১৫ বায়োনিক, ৬ কোরের এ১৫ সিপিইউ, ৪ কোরের জিপিইউ। সেই সঙ্গে ১৬ কোরের নিউরাল ইঞ্জিন। ডিভাইসটির সামনে রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। সেলফির জন্য রয়েছে ৭ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।
ফোনটির বাজার মূল্য ৪২৯ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৩ হাজার টাকা।
ফোনে বেশি মেগাপিক্সেল থাকা মানেই যে ফোনের ক্যামেরা ভালো তা নয়। ক্যামেরার অ্যাপারচার, আইএসও, পিক্সেলের আকার ও অটোফোকাসের মতো বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ। আলোকচিত্রীরা অবশ্যই ক্যামেরার অ্যাপারচারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।