আয় বাড়াতে এশিয়ার ক্রমবর্ধমান গেমিং বাজারে প্রবেশ করতে চায় শর্টভিডিও প্লাটফর্ম টিকটক। এজন্য গেম ডেভেলপারদের সঙ্গে আলোচনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্লাটফর্মটির এশিয়া-প্যাসিফিক গেমিংয়ের প্রধান মায়ান কোটলার সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়াকে বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী গেমিং বাজারকে কেন্দ্রীভূত করতে এটি টিকটকের একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত।’
টোকিও গেম শোয়ে অংশ নিতে জাপান সফরে যাওয়া মায়ান কোটলার জানান, গেমিং ব্যবসার জন্য টিকটকের একটি বিশেষায়িত দল রয়েছে। যাদের মূল কাজ বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ও বিপণন। দলটি গেম কোম্পানিগুলোকে প্লাটফর্মে কার্যকর বিজ্ঞাপন তৈরি করতে সহায়তা করছে। এছাড়া কীভাবে টিকটক উপযোগী ভিডিও তৈরি করা যায়, সে সম্পর্কে ওয়ার্কশপ আয়োজন করে থাকে তা রা। টিকটকে গেমিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এসব ওয়ার্কশপে সেটি তুলে ধরা হয়।
চীনা টেক জায়ান্ট কোম্পানি বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটির আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে বিজ্ঞাপন। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহারকারীদের ফিডে পেইড বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে থাকে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির বিজ্ঞাপন রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ কোনো নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের লিপস্টিকের ভিন্ন রঙ ভার্চুয়ালি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
গেমিং খাতে টিকটকের আগ্রহের মূল কারণ এর ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক বাজার। টিকটক ও ডাচ রিসার্চ ফার্ম নিউজুর প্রতিবেদন অনুসারে, গত পাঁচ বছরের তুলনায় ২০২২ সালে পিসি গেম রিলিজের সংখ্যা ৮২ শতাংশ বেড়ে ১২ হাজার ৬৯০-এ উন্নীত হয়েছে।
প্লেয়ারদের আকৃষ্ট করতে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিস্তৃত দর্শকের কাছে পৌঁছতে গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রহ রয়েছে। কোটলার বলেন, ‘যদি গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এ লক্ষ্য অর্জন করা আরো গুরুত্বপূর্ণ ও পৌঁছানো কঠিন হয়ে থাকে, তাহলে টিকটকে আসার মাধ্যমে তারা তাদের লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছতে পারবে। এশিয়া প্যাসিফিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাজার। এখানে ভিডিও গেমের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু নিনতেন্দোর মতো শিল্প জায়ান্টদের তুলনায় এখানে অগ্রগতি কম।’
এশিয়ান গেম কোম্পানিগুলো বিশ্বব্যাপী দর্শকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এ অঞ্চলের মুদ্রা দুর্বল হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। এ নিয়ে কোটলার বলেন, ‘আংশিকভাবে মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে। মাঝে মাঝে যখন আপনি দেশীয় বাজারের মধ্যে থাকেন, সেখান থেকে বিশ্ববাজারে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
ইন্ডি বা স্বাধীন গেমের স্টুডিওগুলো চমকপ্রদ কিছু ব্যবস্থা নিতে পারে। তারা তাদের নির্মাতাদের জন্য চমকপ্রদ ক্যারিয়ারের সূচনা করতে পারে। কিন্তু বিপণনের জন্য কম অর্থ ব্যয় করার কারণে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতেই বহু প্রতিষ্ঠানকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ইন্ডি গেম কোম্পানি ইলম সফটওয়্যার এন্টারটেইনমেন্টের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর রিচমন্ড লিম জানান, প্রতিযোগিতা বাড়ার কারণে তার সংস্থা প্লেয়ারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য চেষ্টা করছে। সংস্থাটি বর্তমানে বিজ্ঞাপনের আরো প্রচলিত মাধ্যম, যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য পোস্ট করা বা প্রেস রিলিজ দেয়ার দিকে নজর দিচ্ছে। তবে বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত খরচ ঢের বেশি বলে মনে করেন তিনি।
স্বতন্ত্র স্টুডিও হাইপার রিয়ালের শিন ইমাই বলেন, ‘প্রায় ৮০ শতাংশ ইন্ডি গেম লঞ্চ করার পরও সেগুলো লোকের নজর এড়িয়ে যায়। এটি উদ্ভাবনগত সমস্যা।’