কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন ভূগর্ভস্থ খনিজের পদার্থের সন্ধান পেয়েছে মাইক্রোসফট। যা ব্যাটারিতে লিথিয়ামের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে এবং উৎপাদন প্রযুক্তিতে পরিবর্তন আনবে।
মাইক্রোসফট ও প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি (পিএনএনএল) যৌথভাবে এ খনিজ উপাদান আবিষ্কার করেছে। একে এন২১১৬ নাম দেয়া হয়েছে।
এআই প্রযুক্তি আবিষ্কৃত এ উপাদান ব্যাটারিতে লিথিয়ামের ব্যবহার প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমাবে বলে দাবি কোম্পানিটির। আবিষ্কারটি লিথিয়ামের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে নতুন সমাধান প্রকাশ্যে আনলো। এছাড়াও এটি ব্যাটারিতে শক্তি সংরক্ষণের ধরনেও পরিবর্তন আনবে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, আধুনিক এআই ও হাই-পারফরম্যান্স কম্পিউটিং ব্যবহার করে মাইক্রোসফটের গবেষকরা এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ১৮টি নন অর্গানিক পদার্থ নির্বাচন করছে। এজন্য ৩ কোটি ২ লাখ সম্ভাব্য অজৈব বা নন-অর্গানিক পদার্থের তালিকা ব্যবহার করা হয়েছে।
এন২১১৬ নামক নতুন উপাদানটি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিকাশ করা হয়েছে। মাইক্রোসফটের এআই স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াটিকে আরো ত্বরান্বিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি নয় মাসেরও কম সময়ে একটি কার্যকর ব্যাটারি প্রোটোটাইপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা উন্নত এআই ও কম্পিউটেশনাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সাশ্রয়ী ব্যাটারি তৈরিতে উদাহরণ স্থাপন করেছে।
মাইক্রোসফটের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জেসন জ্যান্ডার জানান, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে এআইয়ের মাধ্যমে বৈপ্লবিক উদ্ভাবনী ও আবিষ্কার দিয়ে বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে আরো অগ্রগতি অর্জন করতে চায় কোম্পানি। তিনি বিশ্বাস করেন, আবিষ্কৃত উপাদানটি ব্যাটারি প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একই সঙ্গে তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এআই সম্ভাবনার ওপর জোর দেন।
রিচার্জেবল ব্যাটারির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে লিথিয়াম। বিভিন্ন মেশিন ও যন্ত্রের পাশপাশি বিশেষ করে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি ও স্মার্টফোনে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার হয়ে আসছে সবচেয়ে বেশি। যে কারণে এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ২০২৫ সাল নাগাদ সম্ভাব্য লিথিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। তাই টেকসই বিকল্প খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও জানান তারা। মাইক্রোসফটের এআইয়ের মাধ্যমে ব্যাটারি প্রযুক্তিতে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিতে একটি কার্যকর সমাধান আনতে পারে বলে আশা করছেন প্রযুক্তিবিশারদরা।