ফিনল্যান্ডভিত্তিক নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম নির্মাতা নকিয়া নারী ও পুরুষ কর্মীদের মধ্যে বিরাজমান বেতনবৈষম্য দূর করতে বিশেষ বাজেট নিয়ে আসছে। এর ফলে চলতি গ্রীষ্মের মধ্যেই নকিয়ার নারী কর্মীরা নিজেদের দাবি বুঝে পাবেন। একই সঙ্গে কিছু পুরুষ কর্মীর বেতন বাড়ানো হবে।
সম্প্রতি মানবসম্পদ পরামর্শবিষয়ক বিশ্বের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান মারসের এক নিরীক্ষায় নকিয়ার কর্মীদের মধ্যে বেতন নিয়ে বিশাল ফারাকের বিষয়টি উঠে আসে। যেটাকে তারা কার্যত লৈঙ্গিক বৈষম্য হিসেবে তুলে ধরেছে। তবে কম বেতন পাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশ নারী হলেও তাদের মধ্যে অল্পসংখ্যক পুরুষ কর্মী রয়েছেন বলেও মারসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই নকিয়ার পক্ষ থেকে এ পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হলো।
নকিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব সুরি বলেন, নারী-পুরুষের যে বেতনবৈষম্যের বিষয়টি দেখানো হয়েছে, সেটা সংখ্যায় অত্যন্ত নগণ্য। কিন্তু যদি পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে বিচার করা হয়, তাহলে এর অনেক গুরুত্ব রয়েছে, যা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। আমরা দ্রুতই এটা দূর করার চেষ্টা করছি। কারণ এ ধরনের বেতনবৈষম্য আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
সারা বিশ্বে নকিয়ার এক লাখের বেশি কর্মী রয়েছেন। গত বছর কোম্পানিটি ২ হাজার ৫৩০ কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করেছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যেসব কোম্পানি ও সরকার যুক্ত হয়েছে, তারা নকিয়ার কর্মীদের মধ্যে বেতন কাঠামোয় লিঙ্গবৈষম্য দূর করার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য দেশটিতে কর্মরত নকিয়ার ২৫০ কর্মীসহ সব কোম্পানিকে নিজেদের কর্মীদের বেতন তালিকা প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে নকিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠানে যে বেতনবৈষম্য রয়েছে, যেটা মাত্র ২১ দশমিক ১ শতাংশ। কারণ অধিক বেতনের অধিকাংশ পুরুষই প্রতিষ্ঠানটির উচ্চপদে চাকরি করেন। কিন্তু মারসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই কাজ করেও নকিয়ায় পুরুষ কর্মীদের চেয়ে নারী কর্মীদের কম বেতন দেয়া হচ্ছে।
বেতনে লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে নকিয়া যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, এর আগে ঠিক একই ধরনের পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেলসফোর্স ডটকম ইনকরপোরেশন। তারা ২০১৫ ও ২০১৭ সালে এমন বৈষম্য দূর করতে ৩০ লাখ ডলার করে বিশেষ বাজেট ঘোষণা করে। শুধু তাই নয়, প্রতি বছর তারা এজন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখে। সেলসফোর্স যে ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল, নকিয়াও তার চেয়ে বেশি কিছু করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে তারা ঠিক কত অংকের বাজেট নিয়ে আসছে, তা স্পষ্ট করেনি। প্রতিষ্ঠানটির চিফ মার্কেটিং অফিসার ব্যারি ফ্রেন্স জানিয়েছেন, তারা একটি ‘অর্থপূর্ণ’ বাজেট নিয়ে আসবেন।