অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি হেলমেট না পরলে মোটরসাইকেল স্টার্ট হবে না। এমনি এক যুগান্তকারী প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন জেলের ছেলে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র।
নদিয়ার ভারত–বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া করিমপুর ১ ব্লকের পিপুলবেড়িয়া গ্রামের ছেলে দোলন হালদার। সে পিপুলবেড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। বাবা ঋষিপদ হালদার পেশায় মৎস্যজীবী। আর্থিক সঙ্কট নিয়েই কোনো মতে সংসার চালান।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থ তেওয়ারি বলেন, দোলন কলা বিভাগের ছাত্র হলেও ওর মস্তিষ্কটা বিজ্ঞান বিভাগের। যে কারণে এলাকার স্কুলগুলো নিয়ে বিজ্ঞান সেমিনারে ওকে আমরা প্রতিযোগী হিসেবে পাঠাই। পরপর ৩ বছর ব্লকে এবং জেলাতে প্রথম স্থান অধিকার করে। ডিপ ফ্রিজের প্লাস্টিকের ট্রের মধ্যে কাদামাটি রেখে তার মধ্যে জিংক ও কপারের পাতের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এলইডি বাল্ব ক্যালকুলেটর চালিয়ে দেখেছিল। ভাতের ফ্যান পচিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সবাইকে চমক দিয়েছিল।
এবার হেলমেট ও মোটরসাইকেল ওয়ারলেস সার্কিট লাগিয়ে এমন আবিষ্কার করে যে, মোটরসাইকেল চালানোর আগে হেলমেট না পরলে কোনভাবেই বাইক স্টার্ট নেবে না।
শিক্ষিকা নন্দিতা সাহা বলেন, এই স্কুলে এসে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে বিজ্ঞানের নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। নানা প্রযুক্তিগত বিষয়ে পরামর্শ দিতাম। কিন্তু ঘটনাক্রমে আমাদের স্কুলের ছাত্র দোলন এমন কতগুলি আবিষ্কার করে ফেলেছে, যেটা এককথায় অবিশ্বাস্য।
দোলন জানায়, বেশ কয়েক বছর আগে আমার এক বড় ভাই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যান। হেলমেট না থাকাতে ওর মাথাতে আঘাত লেগে মৃত্যু হয়।
তারপরে ঠিক করি, কীভাবে মোটরসাইকেলের সঙ্গে হেলমেটকে সংযুক্ত করা যায়। দুটো ওয়ারলেস সার্কিট বোর্ড কিনে একটি হেলমেটে ও একটি মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনে লাগিয়ে দিই। সেই সঙ্গে টুকিটাকি আনুষঙ্গিক কয়েকটি জিনিস কিনে লাগিয়ে দিতেই সাফল্য আসে।
এই কাজটি করতে ১৩৫ টাকা খরচ হয়েছে। এই পদ্ধতিতে হেলমেট না পরলে কোনওভাবেই মোটরসাইকেল আর স্টার্ট হবে না।