ইকমার্স ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস ইভ্যালির সৌজন্য এক হাজার পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী এবং খাদ্যপণ্য বিতরণ করছে ‘এসো সবাই’। প্রতি পরিবারে গড়ে চার জন সদস্যের হিসেবে প্রায় চার হাজার জন পাচ্ছেন এসব খাদ্য সামগ্রী ও ইফতার পণ্য।
করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় এবং কর্মহীন হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সাহায্যের উদ্দেশ্য নিয়ে এক ডিজিটাল উদ্যোগে যাত্রা আরম্ভ করে ‘এসো সবাই’ নামের সংগঠনটি। দেশের তথ্য প্রযুক্তি, ব্যবসা ও অর্থনীতি এবং সংস্কৃতি অঙ্গনের বিষিষ্টজনেরা এ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে দ্রুতই এগিয়ে আসেন। এদের মাঝে অন্যতম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে দেশিয় উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ইকমার্স সাইট ইভ্যালি ডট কম ডট বিডি।
অনুদানকৃত অর্থের পরিমাণ প্রকাশ না করলেও অংকটি যে বেশ বড় সে ইঙ্গিত পাওয়া যায় ইভ্যালি এবং এসো সবাই সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে এসো সবাই ছাড়াও ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (ই-ক্যাব) সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে সুবিধাবঞ্চিতদের সাহায্যার্থে পৃষ্ঠপোষকতা করছে ইভ্যালি।
এক হাজার পরিবারের মাঝে রমযানের খাদ্য সামগ্রী এবং ইফতারের পণ্য বিতরণের উদ্দেশ্যে নিয়ে ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে এসো সবাই। রাজধানী ঢাকাসহ গাইবান্ধা, কিশোরগঞ্জ, নড়াইল এবং রংপুর জেলায় এরই মাঝে কর্মহীন এবং অসহায় পরিবারের মাঝে এসব পণ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমাল ফাউন্ডেশন, নড়াইল এক্সপ্রেস, অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন, বিদ্যানন্দ, মিশন সেভ বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম নিশ্চিত করা হচ্ছে।
নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে এসো সবাই এর অন্যতম সহ-উদ্যোক্তা এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর পরিচালক দিদারুল আলম সানি বলেন, চলমান সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও সুষম বণ্টন নিশ্চিতের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তেমনই লক্ষ্য থেকে আমরা ছয় জন মিলে সম্পূর্ণ অনলাইন এবং ডিজিটাল ভিত্তিক এই সামাজিক উদ্যোগটি নিয়ে কাজ শুরু করি। আমাদের সাথে বিভিন্ন পেশার শতাধিক ব্যক্তিবর্গ আছেন। সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশিত এক গানের মাধ্যমে তারা সবাই এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে অন্যদের এগিয়ে আসতে আহবান জানিয়েছেন। এসো সবাই এর মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কাজ হারিয়ে কর্মহীন হয়েছেন তাদের জন্য আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করে তাদের মাঝে বিতরণ করতে পারছি। আবার সামাজিক দূরত্বও নিশ্চিত থাকছে। আবার অনুদান ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রহণ করার ফলে আমাদের কার্যক্রমের স্বচ্ছতাও থাকছে।
ইভ্যালি ছাড়াও প্রায় ৮১ জন ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক দাতার কাছ থেকে ইতিমধ্যে ১৭ লক্ষাধিক টাকা অনুদান জমা হয়েছে বলেও জানান দিদারুল আলম সানি।
অন্যদিকে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, দেশিয় উদ্যোগ হিসেবে ইভ্যালি সবসময়ই দেশ ও জাতির প্রতি নিজেদের কর্তব্য এবং দায়বদ্ধতা অনুভব করে। সংকটকালীন এই সময়ে আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্য থেকে যতটুকু সম্ভব সবার সাহায্যে এগিয়ে আসতে চাই। একই সাথে অন্যদেরও অনুরোধ করব তারাও যেন এগিয়ে আসেন। এসো সবাই ডিজিটাল মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ এবং বিতরণ করছে বলে এতে স্বচ্ছতাও থাকছে। একটি ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরেকটি ডিজিটাল স্বেচ্ছাসেবী ভিত্তিক সংগঠনের পাশে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। এমন সময়ে যতটা সম্ভব শারীরিক দূরত্ব মেনে ডিজিটাল মাধ্যমকে ব্যবহার করে সংকট উত্তরণে আমাদের সবাইকে কাজ করে যেতে হবে। এই রমযানে আমাদের সবার উচিত নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী অন্যের পাশে দাঁড়ানো।