বাংলাদেশে ই-কমার্সের উন্নয়ন, অনলাইনে দেশীয় পন্যের প্রসার ও ই-বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে উক্ত অনলাইন আম মেলার আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
আজ ২২ জুন, সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘‘আম মেলা ই-বাণিজ্যে সারাবেলা’’ কর্মসূচির উদ্ধোধনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আমমেলা উদ্ভোধন করেন ড. মোঃ জাফর উদ্দীন, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ওবায়দুল আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মোঃ হাফিজুর রহমান, মহাপরিচালক, ডব্লিউটিও সেল, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান, যুগ্মসচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মো. হামিদুল হক, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী। রেজওয়ানুল হক জামি টিমলিডার, একশপ ও মাজহারুল মান্নান, প্রতিনিধি হর্টেক্স ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, শমী কায়সার, প্রেসিডেন্ট, ই-ক্যাব।
বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন বলেন, করোনার কারণে অর্থবাজারে যে প্রভাব পড়েছে তাতে চাষীদের দুঃখ দুর্দশা দেখে এই উদ্যোগের কথা চিন্তা করা হয়েছে। করোনা যেমন অর্থনৈতিক ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে তেমনি নতুন কিছু করার সুযোগও তৈরী করেছে। ই-ক্যাবকে সাথে নিয়ে এই কর্মসূচী বাস্তবায়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এর মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের উৎপাদনকারীকে ই-বাণিজ্যে সম্পৃক্ত করে সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করার পথ সুগম হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ওবায়দুল আজম বলেন, আম দিয়ে যে যৌথ উদ্যোগের সূচনা হয়েছে আম বাজারজাতকরণের সহায়ক ভুমিকার পাশাপাশি ভবিষ্যতে অন্যান্য গ্রামীণ ও কৃষিপন্যের ক্ষেত্রে এধরনের অনলাইন বাজার সম্প্রসারনের ব্যবস্থা করা হবে। রাজশাহীর পাশাপাশি অন্যান্য জেলার আম এবং এই চেইনে যুক্ত করা হবে। বর্তমানে কুরিয়ারের মাধ্যমে আম প্রেরণে যেসব সমস্যা ও অভিযোগ রয়েছে সেগুলো সমাধানের জন্য ই-ক্যাব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ শুধু আমচাষী ও আমবাগান মালিক কিংভা ভোক্তা সাধারণকে উপকৃত করবে তা নয়। ফল ব্যবসার সাপ্লাইচেইনকে সুশৃংখল করবে এবং গোটা ই-কমার্সের উন্নতিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, রাজশাহী জেলায় আমবাণিজ্যের সাথে ৯০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। আমের সরবরাহ সহজীকরনের মাধ্যমে আমের বাজার বৃদ্ধি করলে এই কর্মসংস্থান আরো বৃদ্ধি পাবে। চলতি বছর আমের মুকুল আসার পর থেকে কেনো ধরনের ক্যামিকেল দেয়া থেকে বিরত রাখা হয় এবং বিটিআরসির মাধ্যমে বিনামূল্যে আম প্রেরণের সুবিধা গ্রহণ করার মাধ্যমে আমের দাম যেন বৃদ্ধি না পায় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, সারাদেশে অন্তত ৫০ লাখ মানুষকে ন্যায্যমুল্যে এবং নিরাপদে অনলাইন থেকে আম সংগ্রহ করার সুযোগ করে দেয়া হলো এই উদ্যোগের মাধ্যমে। সরকারী এবং বেসরকারী বিভিন্ন পক্ষের সমন্বয়ে এটা বাস্তবায়ন করা হবে এই কর্মসূচী। তিনি সংশ্লিষ্ঠ পক্ষসমূহকে এই উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান
ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারী আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আমচাষীরা যেন তাদের ফলনের ন্যায্যমূল্য পায় এবং ক্রেতাসাধারণ যেন ঘরে বসে নিরাপদে আম পেতে পারেন পাশাপাশি অনলাইন শপগুলোর আম সরবরাহ পর্যাপ্ত করতে এই আয়োজন করা হয়েছে। কোভিড শুরু হওয়ার পর থেকে জনসাধারণ নিরাপদ সেবা দিতে ই-কমার্স সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো বিরতিহীন কাজ করে চলেছে। এই আম মেলা তারই একটা অংশ। মূলত ই-ক্যাবের ১২শ মেম্বার প্রতিষ্ঠান থেকে আম বাণিজ্যের সাথে যারা যুক্ত রয়েছেন তারা এ প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে চাষী ও বাগানমালিকদের কাছ থেকে আম সংগ্রহ করবেন।
ই-ক্যাবের সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল ওয়াহেদ তমালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে হর্টেক্স ফাউন্ডেশনসহ সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ই-ক্যাবের কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য ও আম বাণিজ্যের সাথে জড়িত ই-ক্যাবের সদস্য কোম্পানীসমূহ। ই-ভ্যালীর সিইও জনাব মোহাম্মদ রাসেল এই উদ্যোগের জন্য সরকার ই-ক্যাবসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলকে ধন্যবাদ জানান। সহযোগিতায় ছিলো আইসিটি ডিভিশন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল, হর্টেক্স ফাউন্ডেশন, ই-পোস্ট, ফুড ফর ন্যাশন ও একশপ। স্পন্সর ছিলো ইভ্যালী। এছাড়া প্রাইভেট সেক্টর থেকে সহযোগিতায় ছিলো- ধানসিড়ি কমিউনিকেশন, চালডাল, মিনাক্লিক, ফুডপান্ডা, সবজিবাজার, কেজিক্লিক ও কমজগত টেকনোলজি। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।