‘সবার জন্য ই-কমার্স ইকোসিস্টেম’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনা আয়োজন করেছে দেশের সর্ববৃহৎ অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশ। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ই-কমার্স ইকোসিস্টেম নিয়ে আজ দারাজের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজে এ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
প্যানেল আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর হেড অব ডিজিটাল বিজনেস- জাবেদ সুলতান পিয়াস। এছাড়াও আলোচনায় শিল্পখাত বিশেষজ্ঞরাও অংশগ্রহণ করেন। এই মতবিনিময় সভা আয়োজনের মূল কারন যেন প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের মতের ভিত্তিতে ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট নীতি নিয়ে সঠিক ও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর এবং দারাজ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোস্তাহিদল হক।
প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে; ই-কমার্স ব্যবসায় আমাদের দেশও এগিয়ে যাচ্ছে প্রবৃদ্ধির দিকে, যা আমাদের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্যানেল আলোচনায় বক্তারা ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধির সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘ই-কমার্স খাতে আমাদের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। যে হারে আমাদের অগ্রগতি হয়েছে তা আগামী তিন বছরের প্রত্যাশিত হারের সমান। এমন কি কোভিড চলাকালীন সময়েও আমাদের ই-কমার্স খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ই-কমার্স ব্যবসার কারণে মহামারী চলাকালীন টিসিবি পণ্য নিয়ে অভাবী মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। আমরা শিগগিরই সকল অংশীদারদের নিয়ে এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করব।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ডিজিটাল বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ই-কমার্সের বিস্তৃতিতে সরকার তিনটি পূর্বশর্তের ব্যাপার নিশ্চিত করেছে: উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ, ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা এবং আস্থা। এমনকি আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঈদুল আজহার সময় অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে কোরবানির পশু কেনার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন কথা শোনার পর মানুষের মনে ই-কমার্স নিয়ে আস্থা তৈরি হয়েছে। আইসিটি খাতে নারীদের অংশগ্রহণে ভারসাম্য তৈরিতেও ই-কমার্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দারাজের মতো ই-কমার্স সাইটগুলোর জন্য উদ্যোক্তারা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে দেশি পণ্য বিক্রি করতে পারছে।
দারাজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, ‘ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধিতে আমরা ই-কমার্স ইকোসিস্টেম-বান্ধব নীতিমালা চাই। নীতিমালায় তিনটি বিষয় থাকা উচিৎ, যথা: গ্রাহক সুবিধা বিবেচনায় সহজে বাস্তবায়নযোগ্য প্রক্রিয়া, আন্ত:সীমান্ত ই-কমার্স ও আমদানি-রফতানি নীতিমালায় এর অন্তর্ভুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা। এটা যদি আমরা করতে পারি ই-কমার্স সাইটগুলো ৫ কোটি ক্রেতা পাবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে আরও অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।’
প্যানেল আলোচনায় দেশের অর্থনীতিতে ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধির ভূমিকা, এ খাতের ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় নানা বিষয়, কার্যক্রম প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, ডেলিভারি সহ সকল ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্সের নিশ্চয়তা, গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষা, নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ই-কমার্স খাতের ভূমিকা, তরুণদের কর্মসংস্থান ও তাদের সঠিক দক্ষতার উন্নয়ন এবং শিল্পখাতের স্বচ্ছতা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় বক্তারা ই-কমার্স নীতি তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সুষ্ঠুভাবে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ঘটে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ খাতের বিকাশে প্রয়োজনীয় সুযোগ পায়।