রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত অনলাইন শপিং প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টে অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেন ভ্যাট গোয়েন্দারা। ভ্যাট ফাঁকির এই সম্পূর্ণ টাকা ইতোমধ্যে আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অনলাইন প্লাটফর্মে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। তারা বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী অনলাইনে অর্ডার গ্রহণ করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করে। কিন্তু তাদের প্রাপ্ত কমিশনের উপর আরোপিত ভ্যাট যথাযথভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেননি। এরপর সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৮ জুন ভ্যাট গোয়েন্দারা প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালায়।
মইনুল খান আরও জানান, অভিযানে প্রাপ্ত দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে মোট ১৮১ কোটি ৭৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকার পণ্য বিক্রি করে। এই সময়কালে পণ্য বিক্রির বিপরীতে ক্রয়মূল্য ১৭৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯৬ টাকা। এক্ষেত্রে কমিশন বাবদ প্রাপ্ত ৬ কোটি ৪৮ লাখ ৭৪ হাজার ৪৭১ টাকা। যার বিপরীত ৫ শতাংশ হারে প্রযোজ্য ভ্যাট ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৪ টাকা। অনলাইনে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিশনের উপর প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৪ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা দেয়নি। এক্ষেত্রে উক্ত মেয়াদে কমিশন বাবদ অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৪ টাকা।
ভ্যাট গোয়েন্দারা অনুসন্ধানে আরও দেখতে পায়, লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে উল্লিখিত সময়ে বিভিন্ন কেনাকাটার উপর উৎসে ভ্যাট ৪ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৭৭ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৯১৩ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩৬ টাকার ফাঁকি দিয়েছে। অর্থাৎ উল্লিখিত ৫ মাসে কমিশনের উপর প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৪ টাকা এবং উৎসে ভ্যাট বাবদ ১৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩৬ টাকাসহ সর্বমোট ৫২ লাখ ২৯ হাজার ১৬০ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
ভ্যাট গোয়েন্দা আরও বলছে, ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ভ্যাট গোয়েন্দা দফতরে অনুষ্ঠেয় শুনানিতে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ মেনে নিয়ে স্বেচ্ছায় ও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারি কোষাগারে জমা করেছে। ভ্যাট ফাঁকির সঙ্গে জড়িত থাকায় অনলাইন প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মামলার প্রতিবেদন ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে।