ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতারণার পর এবার আলোচনায় এসেছে কিউকম। ‘পুরো দেশ আর সারা দুনিয়া জুড়ে কিউকম ছড়াতে চাই, ইনশাআল্লাহ’ ‘৮ বিভাগে নিজস্ব ডেলিভারি পয়েন্ট, ওয়ারহাউজ, কাস্টমার কেয়ার চালু করবে কিউকম’-নিজের ফেসবুক পেজে এমনই নানা চটকদার স্ট্যাটাস আর নিউজের মাধ্যমে কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আরজে (রেডিও জকি) নিরব।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির হেড অফ সেলস, কমিউনিকেশন এন্ড পাবলিক রিলেশন পদে আছেন হুমায়ুন কবির নিরব। প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও হিসেবে আছেন রিপন মিয়া। তাদের মতো তারকাদের উৎসাহে এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এখন প্রতারণার আশঙ্কায় চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন হাজার হাজার গ্রাহক।
প্রতিষ্ঠানটি বিরুদ্ধে অর্ডারকৃত পণ্য নির্ধারিত সময় অতিক্রমের পরও না পাওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। নিরব ও প্রতিষ্ঠানটির মালিক (এমডি ও সিইও) রিপন মিয়ার ফেসবুকে এসব অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। তবে কোন সদুত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। এরইমধ্যে নিজস্ব অফিস বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাই ই-অরেঞ্জের মতো কিউকমের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগীরা। এসব প্রতারণার জন্য আরজে নিরবের মতো তারকারা দায় এড়াতে পারেন না বলে মনে করছেন তারা। অবিলম্বে এসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং ভুক্তভোগী গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ই-কমার্স প্রতারণায় সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মার্কেটিং বা পিআরের লোক দায় এড়াতে পারেন না। এদেরকেও আইনের আওতায় আনলে আর কেউ কখনও এ ধরনের দুর্নীতি করার সাহস পাবেন না। তারকাদের ভাড়া করে এসব ই-কমার্সের মালিকরা তাদের মার্কেটিংয়ের জন্য বেছে নিচ্ছে, তাই সাধারণ মানুষ বেশি প্রতারিত হচ্ছেন। তাই এদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগের বিষয়ে হুমায়ুন কবির নিরবের (আরজে নিরব) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
আরজে (রেডিও জকি) নিরবের ফেসবুকে সাদ্দাম হোসেন নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতে পারেন না, আবার সারা দুনিয়ায় কিউকম। গোফে কাঁঠাল গাছে তেল।
কম্পিট তুষার নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারি লিখেছেন, স্যামসাং ৬৫ ইঞ্চি টেলিভিশন এখনও ১ টাও ডেলিভারি করেননি। দয়া করে ডেলিভারি শুরু করেন।
জানা গেছে, ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতারক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হাফিজুর রহমান জানান, যেসব ই-কমার্স কোম্পানি ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর বা তারকা ভ্যালু ইউজ করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পাচ্ছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।