ই-কমার্স কোম্পানি একসময় অভাবনীয় সাড়া ফেলেছিল, সেই ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা সিইও মোহাম্মদ রাসেল কারামুক্ত হওয়ার পর কোম্পানিটির দায়দেনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ই-কমার্স খাতের আলোচিত এ উদ্যোক্তা এখন বলছেন, ব্যবসায় আগের আগ্রাসী বিপণন থেকে তিনি সরে আসতে চাইছেন। বিশাল মূল্যছাড়ের কৌশল এড়িয়ে ক্যাশ অন ডেলিভারি (পণ্য হাতে পেয়ে মূল্য) পদ্ধতিতে সামনে এগোতে চান তিনি।
তবে সেই মূল্য যাতে বাজারের যেকোনো প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির চেয়ে কম হয় সেদিকেও নজর রাখার কথা বলছেন রাসেল।
এক গ্রাহকের করা মামলায় ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব।
ইভ্যালির পুনর্গঠন হিসাব-নিকাশের সুবিধার্থে তার স্ত্রী শামীমাকে এক বছরের মাথায় শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল আদালত। আর রাসেল মুক্তি পান গত ১৯ ডিসেম্বর।
রাসেল বলেন, “দুই বছর নির্বিঘ্নে পরিকল্পনা মাফিক ব্যবসা করতে পারলে ইভ্যালি দায় পরিশোধের পর্যায়ে পৌঁছাবে। সেক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগ পাওয়ার একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এবং সেই বিনিয়োগ থেকে ব্যবসা সম্প্রসারণের পাশাপাশি দায়দেনাগুলোও পরিশোধ করা যাবে।”
ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে লাভজনক আইডিয়া নিয়ে পৌঁছাতে পারলে ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না। মাসে ৫০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির পর্যায়ে পৌঁছাতে পারলে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটা যাবে। এতে মাসে তিন কোটি টাকা মুনাফা করার একটা পথ তৈরি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী দিনে আমরা আর লোকসান দিয়ে পণ্য বিক্রি করব না। এভাবে দুই বছর পাড়ি দিতে পারলেই নতুন বিনিয়োগ পাওয়া যাবে। বিনিয়োগ থেকেই গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ করতে হবে।”
বন্ধ হওয়ার আগে ইভ্যালির ইউনিক কাস্টমার ছিল ৪২ লাখ। এখন আদালতের নির্দেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ই-ক্যাবের প্রতিনিধি ও রাসেলের পরিবারের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত পর্ষদের অধীনে ইভ্যালির ইউনিক গ্রাহক রয়েছেন ২ লাখ ৭৪ হাজার। বর্তমানে ১২০ জন লোকবল নিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি।
কারামুক্তির পর দায়দেনা নিয়ে রাসেল বলেন, “বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজার কোটি টাকার দায়দেনার যে তথ্য হাজির করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। আমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর হোস্টিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের কাছে ৭ কোটি টাকা দায় পড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তারা সার্ভার স্থগিত করে দিয়েছে। এখন আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে সেই সার্ভার আবার সক্রিয় করা যাবে বলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে মনে হচ্ছে।”