২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্পকে প্রাধান্য দেওয়ায় সাধুবাদ জানাই। স্মার্ট বাংলাদেশ এর জন্য প্রয়োজন স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট বাণিজ্য। দেশের সকল ট্রেডিশনাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ই-কমার্স এ ট্রান্সফর্ম করার জন্য প্রয়োজন আইটি ইনফাস্ট্রাকচার। সেজন্য আইটি ও সফটওয়্যার খাতকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেওয়ার জন্য ই-ক্যাব সহ আইসিটি সংগঠনগুলো দাবি জানিয়ে এসেছে। যা এবারের বাজেটে ৩ বছরের জন্যে প্রস্তাবিত হয়েছে, বিশেষ করে ই-ক্যাব প্রস্তাবিত ই-লার্নিং ও ই অ্যাপ্লিকেশন এর উপর এই কর অব্যাহতি রাখায় এই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে পুরো ডিজটাল ইন্ড্রাস্ট্রির ব্যাকবোন ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ ওয়েবসাইট হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিস কেও কর অব্যাহতির আওয়াত নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।
ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যক্রমে সচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠাকল্পে বিজনেস আইডেন্টিটি প্ল্যাটফর্ম (DBID) ইক্যাবের জোরালো প্রস্তাবনা ছিল। ইতোমধ্যে এটি চালু হলেও ডিজিটাল কমার্স সেক্টরের পৃথক কোন কর্তৃপক্ষ না থাকায় DBID গ্রহনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহকে এখনো ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। এছাড়াও DBID এর কার্যকারিতাও এখনো স্পষ্ট হয়নি।
এছাড়াও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ইক্যাব এর প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল কম্পলায়েন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর পাইলটিং পরবর্তী ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি প্রয়োজন।
ই কমার্স এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্মার্ট লজিস্টিক্স। এ বিষয়ে সরকারের “জাতীয় লজিস্টিক নীতি” প্রনয়নে ই-ক্যাব সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। তবে এই নীতিমালার বাস্তবায়নে স্মার্ট লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠানসমূহ কে ন্যূনতম পাঁচ বছর কর অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন এবং গ্রামীণ পর্যায়ে ও ক্রস বর্ডার ই-কমার্স সম্প্রসারণে “স্মার্ট পোস্ট অফিস” এর পাশাপাশি স্মার্ট লজিস্টিক্স প্রতিষ্ঠানসমূহ কে ডাক মাশুল থেকেও অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি প্রস্তাবিত বাজেটে লজিস্টিক খাতকে অগ্রাধিকার খাত ঘোষনা করায় স্মার্ট লজিস্টিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এর ওয়্যারহাউজ ও ট্রাস্পোর্টেশন এর উপর প্রযোজ্য ভ্যাট মওকুফ করার আহবান জানাচ্ছি।
এছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে ক্যাশলেস পেমেন্ট কে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করা হলেও পেমেন্ট গ্রহনে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহকে পেমেন্ট চার্জ প্রদান করতে হয়, তাই ডিজিটাল পেমেন্ট কে উৎসাহিত করতে এই সেক্টরে পেমেন্ট চার্জ সমমানের ন্যূনতম দুই শতাংশ ক্যাশ ইন্সেটিভ প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ক্যাশলেস পদক্ষেপ নেওয়া বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে যা সামগ্রিক পর্যায়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ করবে।
ই-কমার্স দেশের সবথেকে ক্রমবর্ধমান সেক্টর, এই সেক্টরে গত ৫ বছরে প্রায় ২ লক্ষ নারী ও তরুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে এবং ৫ লক্ষাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, তাই এই সেক্টরের বিকাশে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের কর অব্যাহতি দেওয়াও দাবি জানাচ্ছি।
আমরা আশা করছি স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এবং স্মার্ট অর্থনীতির সংকল্পে ই-কমার্স সেক্টরকে আরো অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং ই-ক্যাব এর প্রস্তাবিত দাবি সমূহ সরকার বিশেষ বিবেচনায় নিতে পারে।
আসিফ আহনাফ
অর্থ সম্পাদক, ই-ক্যাব
সিইও, ব্রেকবাইট ইবিজনেস