বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষাবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম কোরসেরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে কোরসেরা ফর ক্যাম্পাস ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষায় এর দীর্ঘমেয়াদী প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকে আমলে নিয়ে কোরসেরার বিভিন্ন ফিচারও আপগ্রেড করেছে এ প্ল্যাটফর্মটি। এ প্ল্যাটফর্মটির নতুন ফিচারগুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্রেডিট সংযুক্ত অনলাইন কোর্স পরিচালনা, শিক্ষার্থীদের চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রাইভেট কোর্স ব্যবহারের সুযোগ দিবে। নতুন এ ঘোষণাটি গত মার্চ মাসে ক্যাম্পাস রেসপন্স ইনিশিয়েটিভের ধারাবাহিকতায় দেয়া হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকার সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বিনামূল্যে কোরসেরা ফর ক্যাম্পাস ব্যবহারের সুযোগ দিতে ক্যাম্পাস রেসপন্স ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগটি নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে, ৩ হাজার ৭শ’রও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২.৪ মিলিয়নেরও বেশি শিক্ষার্থীকে অনলাইনে শিক্ষাদানে কোরসেরা ফর ক্যাম্পাস ব্যবহার গ্রহণ করছে।
‘চলমান বৈশ্বক মহামারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের শিক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে,’ বলেন কোরসেরার প্রধান নির্বাহী জেফ ম্যাগিওনকালডা।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র সাত মাসে ৩০ থেকে তিন হাজার ৭শ’রও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় কোরসেরা ফর ক্যাম্পাস ব্যবহার করছে। এ অগ্রগতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রেডিট ভিত্তিক অনলাইন কোর্সগুলোকে সহজ করবে এবং শিক্ষার্থীদের চাকরিপ্রাপ্তির জন্য দক্ষতা বিকাশে ভূমিকা রাখবে।’
তিনটি বিশেষ সুবিধা নিয়ে আসার মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষণের প্রতিটি ধাপে শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কোরসেরা ফর ক্যাম্পাস। স্টুডেন্ট প্ল্যানের মাধ্যমে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয় শেখার জন্য বিনামূল্যে ইচ্ছেমতো গাইড প্রজেক্ট ব্যবহার করতে পারবে এবং বছরে* একটি কোর্স করতে পারবে। বেসিক প্ল্যানের আওতায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ হাজার জন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে লাইসেন্স দিবে। প্রতিটি লাইসেন্সে রয়েছে গাইড প্রজেক্ট ব্যবহারের সুবিধা ও বছরে* একটি কোর্স করার সুবিধা। ইনস্টিটিউশন প্ল্যান প্রত্যেক স্টৃডেন্ট লাইসেন্সধারীদের ইচ্ছেমতো গাইড প্রজেক্ট ও ইচ্ছেমতো কোর্স গ্রহণের সুবিধা দিবে। এটি আরো উন্নতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্রেডিট থাকা কোর্সগুলোর অনলাইন লার্নিং প্রোগ্রামগুলো পরিচালনায় সহায়তা করবে।
এ আপগ্রেডেড ফিচারগুলোর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুরক্ষিতভাবে কার্যক্রম পরিচালনা, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পরীক্ষা ও কোরসেরা ফর ক্যাম্পাসের মাধ্যমে অ্যাসাইমেন্টের চৌর্যবৃত্তি শনাক্ত করতে সহায়তা করবে। বৈশ্বিকভাবে শীর্ষস্থানীয় নানা প্রতিষ্ঠান যেমন গুগল, আইবিএম, ফেসবুক, ইনটুইট, সেলসফোর্স ও অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠানের পেশাদার সনদ প্রদানের মাধ্যমে নতুন এ ফিচারগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যুগের চাহিদা অনুযায়ী কর্ম দক্ষ করে তুলতে সহায়তা করবে।
কোরসেরার ইউনিভার্সিটি কনটেন্ট অংশীদার হিসেবে শিক্ষকরা এ প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে পারবে, ফলে তারা দক্ষভাবে নিজস্ব কোর্স, বিভিন্ন প্রজেক্ট ও অ্যাসাইমেন্ট যুক্ত করবে এবং মূল্যায়ন লাইভ২কোরসেরা মাধ্যমে জুম রেকর্ডিংও যুক্ত করতে পারবে। সামনের দিনগুলোতে কোরসেরা নতুন একটি কারিকুলাম টুল চালু করবে, যা কারিকুলামের বাধা দুর করতে, নতুন কিছু শিখতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষায়িত বিষয়ে দক্ষতা অর্জনে শিক্ষকদের কোরসেরার কনটেন্টগুলো ব্যবহারে সহায়তা করবে।
নতুন মোবাইল এবং অফলাইন লার্নিং ফিচারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কম ডাটা খরচে কোর্স ডাউনলোড, সিনক্রোনাইজে অগ্রগতি ও কুইজ, নোট গ্রহণ ও ক্যালেন্ডার সিঙ্ক সহ নানা সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
কোরসেরা ফর ক্যাম্পাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ৯৯ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীকে শিক্ষাসেবা দেয়, এসব শিক্ষার্থীরা ১.২ মিলিয়ন কোর্সে অংশ নেয়। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধারাবাহিক শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে এবং চাকরি ও ইন্টার্নশিপের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার সুযোগ সৃষ্টিতে কোরসেরা ফর ক্যাম্পাস ব্যবহার করে। শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে: আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সটি বাংলাদেশ (এআইইউবি), নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
এ নিয়ে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সটি বাংলাদেশের উপাচার্য ড. কারমেন বলেন, ‘কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির কারণে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তি এবং গুণগতমানের কনটেন্টের সমন্বয়ে হাইব্রিড শিক্ষা পদ্ধতি আগামী দিনের শিক্ষণ পদ্ধতির মূল বিষয় হিসেবে কাজ করবে। কোরসেরা ফর ক্যাম্পাস প্ল্যাটফর্মটি আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেক বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ ও কর্মসংস্থান উপযোগী কনটেন্ট দিয়ে সহায়তা করেছে। আমাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে এ প্ল্যাটফর্মের নতুন ফিচারগুলো সহায়তা করবে বলে আমরা আশা করছি।’