মোঃনাজির উদ্দিনের ডাক নাম পারভেজ। জন্মস্থান চট্টগ্রাম হলেও ঢাকার মিরপুরে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাসরত।ছোট ভাই সহ বাবা-মা থাকেন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে চাকরির উদ্দেশ্যে ২০০৯ এ ঢাকায় পা রাখেন নাজির পারভেজ। একই সাথে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। দশ বছর টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরী করেছেন তিনি। নাজির পারভেজের এই চাকরী ছেড়ে পুরোদস্তুর দেশিপণ্যের উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহজাবীন রাখী।
টেকজুমঃ আপনার উদ্যোক্তা জীবনে পা রাখার গল্প জানতে চাই।
নাজির পারভেজঃ ২০১৯ হঠাৎ মনস্থির করলাম দেশের বাইরে চলে যাবো। তখন ইংরেজিতে ভালো করার তাগিদ থেকে সার্চ ইংলিশ প্ল্যাটফর্মকে পাওয়া,এরপর রাজিব স্যারের সাথে পরিচয় হওয়া। ক্রমান্বয়ে উইকেও স্যারের মাধ্যমেই পাই।এখন অবধি উই এর প্রায় সব অফলাইন ইভেন্ট এবং অনলাইন ওয়ার্কশপে জয়েন করি এবং সময় দিতে শুরু করি গ্রুপেও। গত বছর অক্টোবর মাসে রাজিব আহমেদ স্যারের পরামর্শে ই-কমার্স ব্যবসায় আগ্রহী হয়ে উঠি। ১৪ই ডিসেম্বর ২০১৯ এ অফিস থেকে ব্লক বাটিক ইভেন্টে যাওয়ার সময় স্যারের একটা পোস্ট থেকে আইডিয়া পাই দই নিয়ে কাজ করার। পরে স্যার কে জানাই, স্যার সাথে সাথে সম্মতি দেন এবং বলেন অনেক ভালো সম্ভাবনা আছে। সেইদিনই প্রতাপ পলাশ ভাইয়ের পছন্দ করে দেওয়া Doiwala/দইওয়ালা ডোমেইন কিনে নিই। ডিজাইনার সামিয়া ফারাহ আপুর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রথম স্যার ঘোষণা দেন আমি দই নিয়ে কাজ করবো। পরবর্তীতে শ্রদ্ধেয় রবিন খান ভাইয়ের সম্মানে আয়োজিত ইভেন্টে সবাইকে দই এর স্বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করি। সেখানে ব্যাপক সাড়া পাই। পরে স্যারের পরামর্শে সোর্সিং করতে থাকি নরসিংদী, বগুড়া, টাংগাইল সহ বিভিন্ন জেলায় এবং ২০২০ সালের মার্চে দই নিয়ে কাজ শুরু করি।পরবর্তীতে করোনার কারণে ডেলিভারি বন্ধ হয়ে যায় কিছু দিনের জন্য। আমার উদ্যোগের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ডেলিভারি। আর এই চ্যালেঞ্জ জয় করার ব্যবস্থা করেছেন পিঠা শপের কো-ফাউন্ডার আনিস ভাই।ডেলিভারি ব্যবস্থা উন্নতি এবং প্রডাক্ট কোয়ালিটির ফলে দইওয়ালা সবাই কাছে দইওয়ালার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
টেকজুমঃ চাকরী ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি ই-কমার্সকে কেন ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন?
নাজির পারভেজঃ বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। মানুষ ঘরে বসে সবকিছু পেতে চায়। আমি নিজেও এমন। দীর্ঘদিন চাকরী করে বেতন পেয়েছি ঠিকই কিন্তু মানসিক শান্তি পাইনি,পাইনি যথাযথ সম্মানও। ফলে ই-কমার্স সম্পর্কে জ্ঞান কে নিজের জীবনে কাজে লাগানোর ইচ্ছে থেকে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের উদ্যোগ সহ পদার্পণ করি।
টেকজুমঃ ভবিষ্যতে দইওয়ালা ব্র্যান্ডকে কোন অবস্থানে দেখতে চান?
নাজির পারভেজঃ আমার উদ্যোগ নিয়ে মানুষের মাঝে সাড়া পেয়েছি ব্যাপক। নিজের স্বপ্ন হলো দইওয়ালা দেশের বিখ্যাত দই এর একটি ব্র্যান্ড হবে। নিজস্ব কারখানায় দই উৎপাদন করে সততা ও গুণগতমানের নিশ্চয়তা দেওয়া।
টেকজুমঃ নাজির পারভেজ থেকে দইওয়ালা হয়ে ওঠায় উই এর কৃতিত্ব কেমন?
নাজির পারভেজঃ আমি নাজির পারভেজ দইওয়ালা ভাই হয়ে উঠেছি শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যারের কারণে। আজকে দইওয়ালা ভাই হিসেবে আমার পরিচিতির পুরো কৃতিত্ব উই এর। শ্রদ্ধেয় নাসিমা আক্তার নিশা আপুর দেশিপণ্যের সেরা প্ল্যাটফর্ম উই এবং রাজিব স্যারের পরামর্শ মেনে আজকের আমি। আমার পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং থেকে শুরু করে দই বিক্রি অবধি সবই উইয়ের কারণে সম্ভব হয়েছে। আমার উদ্যোক্তা হিসেবে, দইওয়ালা হিসেবে আজকের পরিচিতি, অবস্থান,সম্মান সবই শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যার, শ্রদ্ধেয় নাসিমা আক্তার নিশা আপু এবং উই গ্রুপের অবদান।
টেকজুমঃ ধন্যবাদ নাজির পারভেজ, আপনার দইওয়ালা নামকরা ব্র্যান্ড হোক। এই প্রত্যাশা রইল।
নাজির পারভেজঃ ধন্যবাদ টেকজুমকে এবং আপনাকে।