জন্মগত ভাবে মিতাশা রহমান খান কুমিল্লার মেয়ে হলেও বিয়ের পর থেকে বর্তমানে ঢাকায় থাকেন। ইডেন মহিলা কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেছেন তিনি। তার উদ্যোগের নাম ফ্রেশ এন্ড হেলথি। মিতাশা রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন টেকজুমের প্রতিবেদক মেহজাবীন রাখী।
টেকজুমঃ উদ্যোক্তার খাতায় নাম লিখিয়েছেন কবে এবং কিভাবে?
মিতাশা রহমানঃ আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু হয় মূলত স্নাতক পড়ার সময়ে অর্থাৎ ২০১৫ সাল থেকে। শুধুমাত্র শখের বশেই উদ্যোক্তা জীবনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। শুরুটা করেছিলাম মাত্র ৩০০ টাকা দিয়ে, রং-বেরঙের ফিতা কিনে নিজে হিজাব পিন বানিয়ে বিক্রি করতাম। আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরুটা হয়েছিল হিজাব পিন বিক্রি করে।
টেকজুমঃ উদ্যোক্তা ক্যারিয়ারের জন্য ই-কমার্স খাতটিকে কেন পছন্দ করলেন?
মিতাশা রহমানঃ স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়াকালীন সময়ে আমার বিয়ে হয়ে যায়। সাধারণত বিয়ের পর ঘরের বউ বাইরে চাকরি করবে সেটা অনেকের অপছন্দ। কিন্তু আমার বরাবরই ইচ্ছা ছিল নিজের প্রতিষ্ঠিত করার। আমাকে যেন মানুষ আমার নিজের নামে চেনে আমার নিজের একটা আলাদা পরিচয় হোক। যেহেতু ঘরে বসেই ই-কমার্স খাতে বিজনেস করা সম্ভব সে কারণেই আমার এই ক্যারিয়ার পছন্দ করা। যেন আমি ঘরে থেকে আমার নিজের একটা পরিচয় তৈরি করতে পারি।
টেকজুমঃ নিজের উদ্যোগকে অদূর ভবিষ্যতে কোথায় দেখতে চান?
মিতাশা রহমানঃ বর্তমানে আমি বাংলাদেশের ৬টি জেলার বিখ্যাত খাবার পণ্য নিয়ে আমি কাজ করছি। এর মধ্যে অন্যতম কুমিল্লার রসমালাই, বগুড়ার দই, দিনাজপুরের পাপড়, সিরাজগঞ্জের ঘি ইত্যাদি। ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সব জেলার বিখ্যাত সব পণ্য নিয়ে কাজ করা যেন মানুষ আমার কাছে, বাংলাদেশ সব জেলার ঐতিহ্যবাহী পণ্যগুলো একসাথে পায়। এছাড়াও আমি আমার নিজের হাতের বানানো বালুশাহী মিষ্টি বিক্রি করে থাকি এবং তা অনেক মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে। আমি চাই আমার বানানো এই বালুশাহী মিষ্টি নিয়েও ভবিষ্যতে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবো।
টেকজুমঃ বাংলাদেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম(উই) এর অবদান কেমন আপনার উদ্যোগে?
মিতাশা রহমানঃ আমার এই খাবারের উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) এর অবদান অনেক বেশি। উই সব সময় দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের জন্য সাপোর্টিভ জোন হিসেবে কাজ করছে। উইয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র সময় বিনিয়োগ করে , নিজের পরিচিতি,পণ্য পরিচিতি করে আমার ব্যবসাকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। উই এর মাধ্যমে,ফোরামটির সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা আপুর সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট এর আন্তর্জাতিক কোর্স, মাস্টার ক্লাস সহ বহু সুযোগ পেয়েছি। এসব বিষয়কে কাজে লাগিয়ে আমার উদ্যোগকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছি। ই-ক্যাব এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ফোরামটির উপদেষ্টা রাজিব আহমেদ স্যারকে পরামর্শক হিসেবে পেয়ে আমি সত্যিই অনেক বেশি গর্বিত বোধ করি কারণ তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আমাদের মত উদ্যোক্তাদের জন্য। এই করোনাকালীন সময় শুধুমাত্র উই এর কারণে গত তিন মাসে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার পণ্য বিক্রি করতে পেরেছি শুধুমাত্র উই প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে। আমি সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা আপু,উপদেষ্টা রাজিব আহমেদ স্যার,সকল ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
টেকজুমঃ ধন্যবাদ মিতাশা রহমান খান। ভালো থাকবেন,আপনার জন্য শুভকামনা।
মিতাশা রহমানঃ টেকজুমকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।