শীতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত খেজুরের গুড়ের পিঠা ও পায়েস। খেজুরের গুড় ছাড়া যেন অপূর্ণ রয়ে যায় শীত মৌসুম। কথায় আছে “ছুটিতে বাড়ী এলে খেজুরের গুড় এনো”।
গ্রামীণ অঞ্চলে শীত মৌসুমের পূর্বে গাছের বাকল/ছাল ছাড়িয়ে রস সংগ্রহের জন্যে প্রস্তুত করা হয় খেজুর গাছ। প্রতিদিন বিকেলে গাছের ছাল সরিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় মাটির কলস। সারা রাত টপ টপ করে রস ঝরে পূর্ণ হয় এ কলস। কুয়াশা ভেজা সকালে রস ভর্তি কলস নামিয়ে আনে গাছিরা।
শীতের শুরুতে পাওয়া যায় নতুন চাল। তাই বাহারি রকমের পিঠা খাওয়ার উৎসব চলে সর্বত্রে। আত্মীয়ের বাড়িতে পিঠা ও খেজুড়ের গুড় পাঠানোর রেওয়াজ রয়েছে। পায়েস ও চায়ে বাড়তি স্বাদ যোগ করতে ব্যবহার করা হয় খেজুড়ের গুড়।
চরদিকে কনকনে শীত আর চলছে পিঠা-পায়েস খাওয়ার ধুম। শীত মৌসুমে গ্রামেগঞ্জে, হাট-বাজার, অলিতেগলিতে, অনলাইনে সহ সর্বত্র বিক্রি হয় নতুন চালের পিঠা। কেউ খায় বিভিন্ন রকম ভর্তা আর কেউ খায় খেজুরের গুড় দিয়ে।
খেজুর গুড়ে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে আয়র, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। রক্তস্বল্পতা, হাড় ও বাতের ব্যথায় উপকার মিলে খেজুর গুড় খেলে। হজমে সাহায্য করা এনজাইমের শক্তি যোগায় খেজুড় গুড়।
বর্তমানে ফেসবুক ও ই-কমার্সের কল্যাণে যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাংগা, মাগুরা, নড়াইল, খুলনা, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও মাদারীপুর সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় উৎপাদন হওয়া খেজুড়ের গুড় দ্রুত সময়ে ডেলিভারি পাওয়া যায় সারাদেশে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কাজ করেন বনলতা ফুডের উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন শীত মৌসুম শুরু হওয়ায় অন্যান্য পণ্যের চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে খেজুড়ের গুড়। এবছর তিনি খেঁজুরের গুড়ের পাটালি, খুরি, ঝোলা/লিকুইড ও দানাদার গুড় বিক্রি করছেন অনলাইনে। তিনি আরও বলেন, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১৩ জেলায় ডেলিভারি হয়েছে বনলতা ফুডের গুড়। যার বাজার মূল্য অর্ধলাখ টাকার বেশি।
খুশব সুইটসের উদ্যোক্তা ফারহানা বিনতে আজাদ খুশবর সাথে কথা বলে জানা যায়, ফেসবুকের মাধ্যমে গত ১২ দিনে শুধু ঢাকা শহরে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ঝোলা, পাটালি ও নাড়িকেল গুড় বিক্রি করেছেন।
আরও কয়েকজন উদ্যোক্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে অনলাইনের অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর খেজুড়ের গুড় বেশি বিক্রি হচ্ছে।
লেখক : মোঃ দেলোয়ার হোসেন
প্রতিষ্ঠাতা আওয়ার শেরপুর।