অনেকেই বাটিক এবং টাইডাই নিয়ে দ্বিধায় পরে যান। দুটিই ডাইং পদ্ধতি শুধু প্রক্রিয়া ভিন্ন। বাটিক করা হয় মোমের সাহায্য নিয়ে এবং টাই-ডাই সুতায় বেঁধে বিভিন্ন নকশা তোলা হয় কাপড়ে।
তুলা এবং সিল্কের মত ঘন বোনা প্রাকৃতিক কাপড়গুলোকেই সাধারণত বাটিক এর জন্য বেছে নেওয়া হয় কারন এই কাপড় মোমকে শোষন করতে পারে ফলে মোম ছড়িয়ে পরে না।
কলকাতার শান্তি নিকেতনে বাটিকও পড়ার একটি বিষয় হিসেবে চালু করার পর এই শিল্পটি আরো জনপ্রিয়তা লাভ করে। মাদ্রাজের চোল মন্ডল এলাকার বাটিক বেশ প্রসার লাভ করেছে।
বাটিক একটি শিল্প। কত শত নতুন নতুন ডিজাইন উঠে আসে কারিগরদের হাতে। রং, তুলি দিয়ে কখনও নিজেদের খুশি মত, কখনও চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের কাজগুলোকে ফুটিয়ে তোলেন এই শিল্পীরা। কিন্তু তাদের সাথে কাজ করতে যেয়ে দেখেছি, তারা অধিকাংশ সুতি কাপড়েই কাজ করে থাকেন। বাটিক, টাইডাই এর পার্থক্য সম্পর্কে তাদের জানা নেই। অনেকের ধারনা ও নেই সুতি ছাড়াও অন্যান্য ম্যাটারিয়াল যেমনঃ হাফসিল্ক, মসলিন, খাদি, সিল্ক, উলেন সহ এমন অনেক কাপড়েই টাই ডাই বা বাটিক হয়! যদি বাংলাদেশের বাটিক এবং টাই-ডাই কারিগরদেরকে সরকারী বা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে কাপড়, রং এর অনুপাত এর উপর প্রশিক্ষন এবং অন্যান্য দেশের ডিজাইনের সাথে পরিচিত করানো যায় তাহলে আমার মনে হয় আমাদের দেশের কারিগররাও নিজেদের যোগ্যতার প্রমান দিতে পারবেন। বাইরের দেশের বাটিকের মত আমাদের দেশের বাটিক ও অনেক বেশী জনপ্রিয়তা পাবে।
আমাদের দেশের বেশ বড় একটি অংশ বাটিক পেশার সাথে জড়িত। কুমিল্লা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জের বেশ অনেকাংশ জুড়েই রয়েছে এ পেশার মানুষের বসবাস।যদি কারিগরদের প্রশিক্ষণ করিয়ে নতুন নতুন কাজ করার জন্য উৎসাহিত করা যায় তবে তাদের পরবর্তী প্রজন্মও বাটিক শিল্পকে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হবেন। এতে করে বাংলাদেশ থেকে শুরু না হলেও বাংলাদেশী বাটিক দেশের বাইরেও অন্যান্য দেশের মতই সমাদৃত হবে।প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পরবে নতুন নতুন বাটিকের পণ্য। প্রচলিত ধারা থেকে বের হওয়ার সময় এখনই।স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন উৎসবে বাটিক টাই-ডাই এর পণ্যকে বেছে নিবেন।
যেহেতু সকল বয়সীদের মানুষই বাটিক টাই-ডাই পছন্দ করেন তাই যদি কারিগরদের সঠিক প্রশিক্ষণ করে আরো উন্নয়ন করা হয় তবে নতুন নতুন সম্ভবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।