বাটিক শুধুমাত্র এক টুকরো কাপড় নয়। আমি একে দেখি বিভিন্ন রূপে, বিভিন্ন ঢং এ। এই এক টুকরো কাপড় দিয়ে চাইলে আমরা অনেক কিছু তৈরী করতে পারি। একজন উদ্যোক্তার প্রথম চ্যালেঞ্জ তার পণ্যকে নতুন নতুন রূপে সকলের সামনে নিয়ে আসা। এর জন্য যা দরকার তা হলো প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি,সাহস আর ধৈর্য্য।
সারাবিশ্বের মানুষের কাছে বাটিক একটি জনপ্রিয় পণ্য। ইন্দোনেশিয়াতে বাটিক শিল্প সবচাইতে বেশী জনপ্রিয়। ইন্দোনেশিয়া, মিশর, জাপানে সুতির চাইতে সিল্ক কাপড়ে করা বাটিক বেশী জনপ্রিয়। পাশের দেশ ভারতের বটুয়া,নাগড়া অনেক বেশী আকর্ষণীয়।
বাংলাদেশের বাটিক এবং টাই-ডাই এর সুতি পোশাক সকলের কাছে সমাদৃত,কারন সুতি কাপড় আরামদায়ক এবং দাম ও হাতের নাগালে।কিন্তু এখন সময় এসেছে সুতি পোশাকের বাইরেও টাই-ডাই বাটিকের তৈরী নতুন নতুন পণ্য নিয়ে কাজ করার। মসলিন, সিল্ক, খাদি, জর্জেট,হাফ সিল্ক কাপড় টাই-ডাই বাটিক করার উপযোগী। সুতির মত এই কাপড়ে বাটিক করে তা বেশী বেশী প্রচার করলে ক্রেতারা নতুন পণ্যের প্রতি আগ্রহী হবেন।
ব্যবসাতে দীর্ঘদিন টিকে থাকতে হলে পণ্যের নতুনত্ব আনতে হবে। এর জন্য ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং মানষিকতা থাকতে হবে। তবে তার আগে সেই পণ্যের টার্গেট কাস্টমার, তাদের পছন্দ, চাহিদা,বয়স, পেশা এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হবে। উদাহরণসরূপ বলা যায়, টাই-ডাই বাটিকের তৈরী সেন্ডেল করার আইডিয়া আসে তখন নিজের জন্য এক জোড়া তৈরী করি। এরপর দেখতে পাই এটি সম্পূর্ণ নতুন পণ্য হলেও, বেশ সাড়া পরে মানুষের মধ্যে এবং অনেকেই এই পণ্যটি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ।
এরপর ক্রেতাদের চাহিদা,বাজেট,পছন্দ অনুযায়ী সেন্ডেলের কাজ শুরু করা হয়। গতবছরের জুলাই থেকে তেজস্বী শুধুমাত্র অনলাইনে টাই-ডাই বাটিকের তৈরী সেন্ডেল প্রায় ২০০ জোড়া বাজারজাত করতে সক্ষম হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। যেখানে সেন্ডেলের সাইজ নিয়ে আমরা সরাসরি কিনতে গেলেও সমস্যায় পড়ি সেখানে অনলাইনে সেন্ডেল বিক্রি করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং কিন্তু তারপরেও চেষ্টা করতে হবে প্রতিনিয়ত।
সেন্ডেলের পর সম্প্রতি বাটিকের পার্স, ব্যাগ নিয়েও কাজ শুরু করেছে তেজস্বী।
তবে যে কোন নতুন পণ্য বাজারজাত করার পূর্বে অবশ্যই মার্কেট এনালাইসিস করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে, সঠিক ক্রেতাদের কাছে নতুন পণ্যটি পৌঁছে দিতে না পারলে ব্যবসা লসের সম্মুখীন হতে পারে এর ফলে আত্নবিশ্বাস নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্রেতার বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন নতুন পণ্য তৈরীর মাধ্যমেই বাটিক শিল্পটিকে আরো সমৃদ্ধশালী করা সম্ভব।