সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে ফেক ছবি নিয়ে আলোচনা হয় হরহামেশা। কখনো কখনো এসব ছবি ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হয়ে যায়। এগুলোর অধিকাংশ ফটোশপের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। যা শনাক্ত করার কিছু উপায় আছে।
লাইটের তারতম্য: ফটোশপে জোড়া দেওয়া ছবির দুই পাশের লাইটের মিল থাকে না। একটু ভালো করে খেয়াল করলেই আলোর এই পার্থক্য ধরা যায়। দুই পাশের উজ্জ্বলতা দুরকম হলে বুঝতে হবে এই ছবিতে কারসাজি করা হয়েছে।
এখানে আরেকটি ব্যাপার আছে। দুটি ছবি যদি ইনডোরে তোলা হয়, তাহলে লাইটের পার্থক্য সেভাবে বোঝা যাবে না। তাই মূল ছবিটি বের করতে অন্য উপায় অবলম্বন করতে হবে।
ইমেজ সার্চ: ফেক ছবি প্রায়ই ষড়যন্ত্রকারীরা গুগল কিংবা অন্য কোনো ব্রাউজার থেকে সংগ্রহ করে। তাই গুগল ইমেজ সার্চ থেকে আপনি আসল ছবিটির সন্ধান পেতে পারেন।
এ জন্য প্রথমে আপনাকে গুগলে যেতে হবে। তারপর ডানদিকে ‘Picture’ বা ‘ছবি’তে ক্লিক করতে হবে। যে ছবিটি আপনি শনাক্ত করতে চান, সেটি মাউস দিয়ে ক্লিক করে টেনে এনে সার্চ অপশনে ফেলতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে নিচের দিকে বেশ কিছু অপশন দেখা যাবে। সেখান থেকে বোঝা যাবে, আগে কোথায় কোথায় এই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে।
মেটাডেটা: ডিজিটাল ক্যামেরার ছবিতে অনেক সময় কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে ফটো এডিটর ব্যবহার করে তথ্য জানা যেতে পারে।
‘metapicz.com’ এডিটরে ছবির ইউআরএল দিয়ে ‘go’তে ক্লিক করে একটি ছবির এম্বেড করা মেটাডেটা জানা যাবে।
স্মার্টফোন বা ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা হলে ছবিতে দিন, সময়, ক্যামেরার নানা তথ্য থেকে যায়। ফেক ছবিতে স্মার্টফোনের জিওট্যাগ ব্যবহার করে মেটাডেটা সরিয়ে ফেলা হয়।
ফটোফরেনসিকস ব্যবহার করেও আপনি মেটাডেটা উদ্ধার করতে পারেন। এটি এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে এরর লেভেল অ্যানালাইসিস (ইএলএ) ব্যবহার করে ছবির কোন অংশ এডিট করা, তা বের করা যায়।
অন্যান্য তথ্যের মধ্যে মেটাডেটাতে আপনি যা পাবেন: মূল ছবিটি তোলার তারিখ ও সময়। ছবির ভৌগোলিক অবস্থান। ক্যামেরার মডেল এবং ছবি তোলার সময়ের ক্যামেরা সেটিংস। কপিরাইট তথ্য।
যেভাবে ফটোফরেনসিকস ব্যবহার করবেন: ‘http://fotoforensics.com’ এই ওয়েবসাইটে ঢুকলেই আপনি দুটি অপশন পাবেন-Image URL এবং Upload File। ইউআরএল এবং ফাইল আপলোড করে সহজে সব তথ্য পেয়ে যাবেন। ইউআরএল বের করতে না পারলে choose File’ এ ছবি দিয়ে Upload file’এ ক্লিক করুন। এবার বাঁদিকে Analysis’এ যান। সেখানে বক্সের ভেতর পাঁচ নম্বরে ‘Metadata’ দেখতে পাবেন। ওখানে ক্লিক করে ছবির সব তথ্য পেয়ে যাবেন।Analysis:
টিনআই: মাঝে মাঝে গুগল সার্চও ছবির উৎস খুঁজে বের করার জন্য যথেষ্ট নয়। সে ক্ষেত্রে টিনআই নামের আরেকটি রিভার্স সার্চ টুল ব্যবহার করা যেতে পারে।
টিনআই এবং গুগল এর প্রধান পার্থক্য হচ্ছে, টিনআই হুবহু অথবা এডিট করা ছবিও খুঁজে বের করে।
যেভাবে ব্যবহার করবেন: এই পদ্ধতিতে সার্চবারে ছবিটির অ্যাড্রেস লিখুন অথবা হার্ডড্রাইভে থাকা ছবিটি ক্লিক করে টেনে নিয়ে এসে ছেড়ে দিন। আপনি ‘বিগেস্ট ইমেজ’ অপশনটি ব্যবহার করে মূল ছবিটি সহজে খুঁজে পাবেন।