ম্যালওয়্যারের যে প্রোগ্রামগুলো কম্পিউটারের কাজকর্ম নজরদারি করে, সেগুলো কতটা বিপজ্জনক তা হয়তো আপনার ভাবনাতেই এখনো আসেনি। এগুলো ডিলিট করার জন্য কম্পিউটার কোনো নোটিফিকেশন পাঠাতে পারে না। তারা বরং সিস্টেমে লুকিয়ে থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ এবং রেকর্ড করতে থাকে!
স্পাইওয়্যার আপনার ওয়েবক্যাম ফিড থেকে সব কিছু ‘ছিনতাই’ করতে পারে। শুধু তাই নয়, কিবোর্ড ব্যবহার করে কাকে কী লিখছেন, সেগুলোও রেকর্ড করার ক্ষমতা রাখে। প্রযুক্তি দুনিয়ার এই ‘ভিলেনের’ উদ্দেশ্য আপনার ডিজিটাল জীবন সবার সামনে তুলে ধরা, ব্যাংক হিসাব হাতিয়ে নেওয়া অথবা আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করা। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে পপুলার সায়েন্স ওয়েবসাইটের পরামর্শ অনুসরণ করতে পারেন।
সিস্টেম নিরাপত্তা: নিশ্চিন্ত থেকে কম্পিউটার ব্যবহার করতে হলে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে। অধিকাংশ অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম উইন্ডোজ এবং ম্যাক দুটির জন্যই কিলগার, ওয়েবক্যাম হ্যাকার এবং অন্য স্পাইওয়্যার প্রতিরোধ করতে পারে। ভালো সেবা পেতে সফটওয়্যারগুলো আপডেট রাখতে হবে।
যে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন: সিকিউরিটি সমাধান মাধ্যমে সব অ্যান্টিভাইরাস সবার জন্য ফ্রি থাকে না। একটা নির্দিষ্ট ধাপ পর্যন্ত অর্থ ছাড়া ব্যবহার করা যায়। পেইড ভার্সন ব্যবহার করলে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে না বললেই চলে।
পেইড ছাড়া চারটি প্রোগ্রাম আছে, যেগুলো গত কয়েক বছরে বিনা মূল্যে ব্যবহারকারীদের ভালো সেবা দিয়েছে। কখনো কখনো এগুলো কমদামি অ্যান্টিভাইরাসের থেকেও ভালো কাজ করেছে।
এগুলো হল: Windows Defender (উইন্ডোজ টেনসহ) AVG Free, (উইন্ডোজ, ম্যাক দুটিতেই ফ্রি), এটির ফুলভার্সন পেতে হলে আবার প্রতি বছর ৯০ ডলার খরচ করতে হবে, Bitdefender এবং Avast।
এগুলোর পাশাপাশি আরেকটু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় ধাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। উইন্ডোজের জন্য বিনা মূল্যে Spybot Search এবং Destroy আছে। নিয়মিত অ্যান্টিভাইরাস প্যাকেজের সঙ্গে এগুলো শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ক্লিন ইনস্টল: ভাইরাস, স্পাইওয়্যার, ম্যালওয়্যার থেকে পরিত্রাণ পেতে কম্পিউটার ক্লিন ইনস্টল করতে পারেন। যখন আপনি ক্লিন ইনস্টল করবেন তখন আপনার হার্ড ড্রাইভের সবকিছু মুছে ফেলা হয়। তাই আর কোনো ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকে না। যদি স্ক্যান আপনার জন্য কাজ না করে এবং ভাইরাস আপনার কম্পিউটারের রেজিস্ট্রিতে থাকে তবে আপনার জন্য তা ভালো, কেন না ক্লিন ইনস্টলের পূর্বে আপনি আপনার ছবি, ডকুমেন্ট এবং সব গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ব্যাকআপ হিসেবে রাখতে পারবেন।
ব্যাকআপ ফাইলের সবচেয়ে সহজ উপায় হল এক্সটারনাল হার্ড ড্রাইভ ব্যবহার করা বা ফ্ল্যাশ ড্রাইভ বা ডিভিডি বার্ন করা ইত্যাদি। ক্লিন ইনস্টল করা খুব একটা কঠিন কাজ নয় শুধু আপনার হার্ড ড্রাইভে এটি কপি করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে মাত্র।
বিপদ সংকেত বোঝা: স্পাইওয়্যার থেকে রক্ষা পেতে হলে আপনাকে সতর্ক সংকেত বুঝতে হবে। কম্পিউটারে কী ইনস্টল করছেন, কোথা থেকে করছেন সেটি দেখুন। অপরিচিত ঠিকানা থেকে কিছু ডাউনলোড না করাই ভালো। সন্দেহজনক ফাইল দেখলেই কী লেখা আছে পড়ার চেষ্টা করুন। গুগলে সেই বিষয়ে সার্চ দিন।
পুরোনো কম্পিউটার এমনিতে একটু ধীরে কাজ করে, সেটি আরও ধীর হয়ে গেলে বুঝতে হবে বিপদ আসন্ন। এটি একটি সংকেত।
কম্পিউটারে অনেক প্রোগ্রাম চালু নেই, অথচ সফটওয়্যার থেমে যাচ্ছে, গতি কমে যাচ্ছে; বারবার এমন হলে বুঝতে হবে স্পাইওয়্যার ঢুকেছে।