বর্তমান সময় যেসমস্ত অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন লঞ্চ হয়, প্রায় প্রত্যেকটি ফোনেই থাকে অসংখ্য নতুন ফিচার, সেটিংস এবং অপশন। এই সমস্ত ফিচার, সেটিংস স্মার্টফোনগুলির ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। যদিও, বেশিরভাগ মর্ডান স্মার্টফোনই ডিফল্ট সেটিংসের সাথে গ্রাহকদের হাতে এসে পৌছায়। এই ডিফল্ট সেটিংস অনেক সময়েই গ্রাহকদের পছন্দ মতো সার্ভিস দিতে পারেনা।
ফোনের লাইফ ও পারফরম্যান্স
তবে প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনেই বেশকিছু সেটিংস ও অপশন রয়েছে যেগুলি পরিবর্তন করলে, আপনি আপনার ডিভাইসের থেকে সেরা পারফরম্যান্সটি পাবেন। এর সাথে ব্যাটারি লাইফও অনেক বেশি সময় থাকবে এবং অ্যান্ড্রয়েডস্মার্টফোনগুলি ব্যাবহারের সময় আরও সহজ ও স্মুথ হয়ে যাবে। আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের থেকে যদি ম্যাক্সিমাম সার্ভিস পেতে চান এবং ব্যাটারি লাইফও বাঁচাতে চান, তাহলে আপনার ডিভাইসের এই সেটিংসগুলি অবশ্যই পালটে ফেলুন। অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের সেটিংসগুলির সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন-
ডার্ক মোড ইনেবেল করুন
প্রত্যেকটি মডার্ন স্মার্টফোনেই থাকে সিস্টেম-ওয়াইড ডার্ক মোড। আপনার ডিভাইসের প্যানেলটি যদি অ্যামোলেড হয়, তাহলে ডার্ক মোড চালু করলে আপনার ফোনের ব্যাটারি লাইফ অনেক বেশি উন্নত হবে। ডার্ক মোড ইনেবেল করলে কম আলোতেও ফোন ব্যবহার করতে কোনো অসুবিধা হয়না। এই মোডে আপনার চোখের উপর চাপও কম পরবে।
অটো-স্ক্রিন ব্রাইটনেস ডিসেবেল করুন
স্মার্টফোন সম্পর্কে সবচেয়ে বড় মিথ হল অটো-ব্রাইটনেস ফিচারটি ফোনের ব্যাটারি লাইফ সর্বোচ্চ করতে সাহায্য করে। যদিও, এই ফিচারটি ডিজাইন করা হয়েছিল, যাতে বেশি আলোতে ফোনের স্ক্রিনের ব্রাইটনেসও অনেক বেশি হয়। অর্থাৎ, বাইরের আলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে ডিভাইসের স্ক্রিনের ব্রাইটনেস দেওয়া। তবে এবিষয় সকলেই জানেন যে, যত বেশি ব্রাইটনেস হবে ফোনের ব্যাটারিও ততো তারাতারি শেষ হবে। ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ বাঁচানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হল অটো ব্রাইটনেস ডিসেবেল করা এবং ব্রাইটনেস 50% এর কাছাকাছি রাখা। প্রয়োজন মতো নিজে ব্রাইটনেস কমানো বাড়ানোই উচিত।
ব্যাটারি অপটিমাইজেশন ইনেবেল করুন
প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনেই রয়েছে ব্যাটারি অপটিমাইজেশন অথবা অ্যাডাপটিভ ব্যাটারি ফিচার। এই ফিচারটি অটোমেটিক আপনার ফোনের ব্যাটারি অপ্টিমাইজ করতে সাহায্য করে। এর ফলে ব্যাটারি লাইফ যেমন উন্নত হয় তেমনই ব্যাটারিটি অনেকদিন পর্যন্ত ঠিক থাকে।
অব্যবহৃত অ্যাপ ডিলিট করুন
স্মার্টফোনে থাকা প্রতিটি অ্যাপই কম-বেশি কিছু পরিমাণ RAM, স্টোরেজ এবং ব্যাটারি খরচ করে। এর মধ্যে বেশ কিছু অ্যাপ সবসময় ব্যাকগ্রাউন্ডেও চলতে থাকে। যে অ্যাপগুলি আপনার অপ্রয়োজনীয় মনে হয় অথবা আপনি ব্যবহার করেন না, সেইসমস্ত অ্যাপ আনইন্সটল করলে সিস্টেমের উপর চাপও কমবে এবং আগের থেকে আরও ভালো সার্ভিস দিতে পারবে।
হোম স্ক্রিন পরিষ্কার রাখুন
হোম স্ক্রিন পরিষ্কার রাখলে ব্যাটারি বা ফোনের পারফরম্যান্সের হয়তো কোনো উন্নতি হয়না, তবে পরিষ্কার ঘরের মতো পরিষ্কার হোম স্ক্রিন রাখলা আপনার ফোনও ফ্রেস থাকবে এবং আপনার কোনো অ্যাপ ইন্সট্যান্ট খুজে পেতেও সমস্যা হবেনা। অগোছালো হোম স্ক্রিন থাকলে ভুল বসত অন্য অ্যাপ খুলে যাবে এবং এতে আপনারই ফোনের RAM এর উপর চাপ পরবে।
অটোমেটিক ব্যাকআপ ইনেবেল করুন
স্মার্টফোনের গ্যারান্টি কেউ দিতে পারেনা। ইলেকট্রনিক ডিভাইস আজ আছে, কাল নেই। এমন অবস্থায় অটোমেটিক ব্যাকআপ আপনার গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত ডেটা, যেমন-ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট, মেসেজ, ফোন নম্বর ইত্যাদি সুরক্ষিত থাকবে। এবং আপনি যখন ইচ্ছে আপনার ইচ্ছে মতো ডেটা খুজে পাবেন। এবিষয় জেনে রাখা ভালো, অ্যান্ড্রয়েড এর ডিফল্ট ব্যাকআপ ফিচারটি সব কিছুর ব্যাকআপ নেয় না। যেমন WhatsApp এর ব্যাকআপ ম্যানুয়ালি নিতে হয়। গুগল ফটো ফোনে না থাকে ছবি ও ভিডিও ম্যানুয়ালি ব্যাকআপ নিতে হবে। Smartphone Buy(2).jpg
ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচার ইনেবেল করুন
স্মার্টফোন একটি ছোট গ্যাজেট। ডিভাসটি অনেক সময়েই আমরা হারিয়ে ফেলি। এক্ষেত্রে Google এর Find My Device ফিচারটি ইনেবেল করা থাকলে আপনার স্মার্টফোন হারিয়ে গেলেও সহজেই ট্র্যাক করতে পারবেন। লোকেশন ট্র্যাকিং এর পাশাপাশি আপনার ডিভাইসের ডেটা মুছে ফেলতে বা ব্যাকআপ নিতে পারবেন। স্যামসাংস্মার্টফোনগুলির নিজস্ব ফাইন্ড মাই মোবাইল সার্ভিস রয়েছে। এই ফিচারটির সাহায্যে স্যামসাং গ্রাহকরা টেম্পোরারি স্মার্টফোন লক কিংবা রিসেন্ট কল-লগও দেখতে পারবেন। আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন android.com/find সাইট থেকে ট্র্যাক করতে পারবেন। স্যামসাং গ্রাহকরা findmymobile.samsung.com সাইট থেকে তাদের স্যামসাং স্মার্টফোন ট্র্যাক করতে পারবেন।
কুইক সেটিংস প্যানেল পরিবর্তন করুন
অ্যান্ড্রয়েড এর কুইক সেটিং প্যানেলটি খুবই কাজের একটি ফিচার। এর সাহায্য খুব সহজে এবং দ্রুত দরকারি ফিচারগুলি ব্যবহার করা যায়। যেমন- আপনি যদি দ্রুত Bluetooth ইনেবেল করতে চান, আপনাকে শুধু আপনার স্ক্রিন থেকে কুইক সেটিং প্যানেলটি সোয়াইপ ডাউন করতে হবে। এরপর Bluetooth আইকনে ক্লিক করলেই আপনার কাজ হয়ে যাবে। অ্যান্ড্রয়েড তার গ্রাহকদের নিজেদের পছন্দ মতো কুইক সেটিংস প্যানেল সাজানোর সুবিধা দেয়।
ডিজিটাল ওয়েলবিং ইনেবেল করুন
ডিজিটাল ওয়েলবিং আপনার ফোনের অ্যাপগুলির ইউসেজ ট্র্যাক করে। ফিচারটি ইনেবেল করলে আপনি জানতে পারবেন, কোন অ্যাপ কতোক্ষণ চলছে এবং আপনি কোন অ্যাপটি কতোক্ষণ ব্যবহার করছেন। এছাড়াও ফিচারটি, বেডটাইম মোড অফার করে। যার সাহায্য আপনার ঠিক করা সময় ফোনটি সাদা ও কালো হয়ে যায় এবং আপনাকে ঘুমানোর কথা মনে করিয়ে (reminder) দেয়।
অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন WINDOWS এর সাথে লিঙ্ক করান
লেটেস্ট অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনগুলি, আপনার ফোন এবং Windows 10 অথবা Windows 11 ডিভাইসের সাথে লিঙ্ক করার সুযোগ দেয়। এই লিঙ্কের মাধ্যমে আপনি আপনার ফোনের নোটিফিকেশন, ফোনকল কম্পিউটার বা ল্যাপটপে রিসিভ করার সুযোগ পাবেন এবং আপনার স্মার্টফোনের গ্যালারি আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপে খুলতে পারবেন।