প্রযুক্তি যত এগিয়ে যাচ্ছে, স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহার তত বাড়ছে। বর্তমানে কম বয়সী থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ, সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোন এখন অনেকটাই আসক্তির পর্যায়ে চলে গেছে। দীর্ঘ সময় ধরে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে বরাবরই সতর্ক করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম কমাতে ভালো সমাধান হতে পারে ‘ডাম্ব ফোন’। খুব সাধারণ ফিচার সংবলিত মুঠোফোন ‘ডাম্ব ফোন’ হিসেবে পরিচিত, যেগুলোকে ফিচার বা বাটন ফোনও বলা হয়ে থাকে। তবে স্ক্রিনটাইম কমাতে বাড়তি খরচ করে এ ধরনের ফোন না কিনলেও চলবে। স্মার্টফোনে কিছু পরিবর্তন এনে ডাম্ব ফোন বানিয়ে ফেলা সম্ভব। মেক ইউজ অবের প্রতিবেদনে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত স্মার্টফোনে সে রকম কয়েকটি পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে—
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইনস্টল
যে অ্যাপগুলো আসক্তি তৈরি করে সেগুলো বাদ দিতে হবে। ক্যালকুলেটর অ্যাপে নিশ্চয়ই কেউ দীর্ঘ সময় কাটাতে চাইবেন না। পাশাপাশি এটি প্রয়োজনীয়। তাই অ্যাপটি রাখা যেতে পারে। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের অ্যাপগুলোই মূলত সর্বোচ্চ স্ক্রিনটাইমের কারণ। এগুলো আনইনস্টল করতে হবে। মেসেজিং অ্যাপের ক্ষেত্রে দেখতে হবে সেগুলো পেশাদার কাজে প্রয়োজন হচ্ছে কিনা। না হলে বাদ দেয়া জরুরি। এসব অ্যাপ আনইনস্টল করতে অ্যাপগুলো কিছু সময় ধরে রাখলে অপশন চলে আসবে। কিছু অ্যাপের ক্ষেত্রে ডিজেবল করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
নোটিফিকেশন বন্ধ
মনোযোগসহকারে কিছু দেখা বা পড়ার সময় একটি নোটিফিকেশন ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য যথেষ্ট। কাজের প্রয়োজনে কিছু অ্যাপ হয়তো স্মার্টফোনে রাখার প্রয়োজন হতে পারে। তবে অ্যাপভেদে নোটিফিকেশন বন্ধ করার সুযোগ রয়েছে। সেটিংস থেকে ‘নোটিফিকেশনস’ অপশনের অধীনে ‘অ্যাপ নোটিফিকেশনস’ রয়েছে। সেখান থেকে প্রতিটি অ্যাপের নোটিফিকেশন আলাদাভাবে বন্ধ করা যাবে। হোয়াটসঅ্যাপের মতো মেসেজিং অ্যাপে প্রতিটি কথোপকথনের নোটিফিকেশন আলাদাভাবে বন্ধের সুযোগ রয়েছে।
ইন্টারনেট বন্ধ
মোবাইল ডাটা ও ওয়াইফাই—এই দুই মাধ্যমে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। স্মার্টফোনে আসক্তির প্রধান কারণ ইন্টারনেট। ইন্টারনেট না থাকলে ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো অ্যাপগুলো ব্যবহার অসম্ভব। এতে স্ক্রিনটাইম অনেকটা কমে আসবে। তাছাড়া কল করতে বা মেসেজ পাঠাতে ইন্টারনেটের প্রয়োজন নেই। তাই স্মার্টফোনকে ডাম্ব বানাতে ইন্টারনেট বন্ধ করা জরুরি।
অফলাইন ফিচার
কিছু অ্যাপে কনটেন্ট ডাউনলোড করে অফলাইনে ব্যবহারের সুযোগ দেয়। গুগল ম্যাপসে নির্দিষ্ট এলাকার মানচিত্র ও স্পটিফাইয়ে গান ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। বিশেষত গুগল ম্যাপস জরুরি প্রয়োজনে বেশ কাজে আসতে পারে।
লঞ্চারের ব্যবহার
প্লে স্টোরে নানা ধরনের লঞ্চার পাওয়া যায়। যেগুলো মূলত স্মার্টফোনের থিম পরিবর্তন করে। কিছু লঞ্চার স্মার্টফোনের অধিকাংশ অ্যাপ ও ফিচার ব্যবহার থেকে বিরত রাখে। লঞ্চার ইনস্টল করার পর শুধু ফোন, মেসেজ, ক্যালেন্ডার, ক্যামেরা ইত্যাদি এ রকম হাতেগোনা কয়েকটা অ্যাপ দেখাবে। এগুলো নিজের মতো করে সাজিয়েও নেয়া যায়।
প্লে স্টোর ডিজেবল
প্লে স্টোর ডিজেবল করলে অনেক ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ডিজেবল করা যতটা সহজ, এনাবল করাও ততটা সহজ। তাই কম্পিউটারের এডিবি ড্রাইভারের মাধ্যমে তা স্থায়ীভাবে মুছে ফেলা যেতে পারে।